নিউজ ডেস্ক:
নিউইয়র্কের ‘সি এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামে’ সম্প্রতি ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের একটি দৈত্যাকার গাড়ি প্রদর্শনীর জন্য আনা হয়। আর এ গাড়িটি দেখে দাবি করা হচ্ছে, মঙ্গলগ্রহের মানব অভিযানে এ গাড়িই ব্যবহার করা হতে পারে।
এদিকে মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানো নিয়ে তোড়জোড় চালাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, যে ব্যক্তি প্রথম মঙ্গলের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছেন, তিনি ইতোমধ্যেই আমাদের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন। সুতরাং, আর খুব বেশি দেরি নেই লালগ্রহের অভিমুখে মানুষের যাত্রার।
তবে মঙ্গল গ্রহে মানুষের যাতায়াতের উপযোগী বাহনটি কেমন হতে চলেছে তার একটি নমুনা হিসেবে নাসা তৈরি করেছে ছয় চাকা বিশিষ্ট এ গাড়িটি। আর কালো রঙের দৈত্যাকার গাড়িটির সঙ্গে দর্শনার্থীরা খুঁজে পাচ্ছেন ‘ডার্ক নাইট’ চলচ্চিত্রের ব্যাট মোবিলের। প্রদর্শনীর সময় সাবেক নভোচারি জন ম্যাকব্রিড ব্যাখ্যা করেন গাড়িটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও।
একটি ভিডিও প্রতিবেদনে জন ম্যাকব্রিড জানান, গাড়িটি দু’টি অংশে বিভক্ত। সামনের অংশটা চালকের জন্য। আর পিছনের অংশটায় রয়েছে একটি পরীক্ষাগার। নমুনা সংগ্রহের জন্য মঙ্গলের বেজ ক্যাম্প থেকে অনেক দূরে যেতে হতে পারে মানুষকে। গাড়িতে বসেই যেন নমুনাগুলো পরীক্ষা করা যায় তাই এই ব্যবস্থা। গাড়িটির ওজন ৫ হাজার পাউন্ড। আর উচ্চতা ১১ ফুট। মঙ্গলের বালুময় উপত্যকায় চড়ে বেড়ানোর জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে চাকাগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক নেভি পাইলট ম্যাকগ্রিড আরও জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি কেনেডির একটা ভাষণ তাকে নভোচারি হতে অনুপ্রাণিত করে। ১৯৬০ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় ম্যাকগ্রিডের সাথে সাক্ষাৎ হয় এই সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতির। এক বছর পর কেনেডির সেই বিখ্যাত ‘আমরা চাঁদে যাচ্ছি’ শীর্ষক ভাষণটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ঘটনা দুটো বদলে দেয় ম্যাকগ্রিডের জীবন। তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন মহাকাশ অভিযান নিয়ে।
মঙ্গলগ্রহে ২০১২ সাল থেকে বিচরণ করছে নাসার একটি রোবোটিক গাড়ি। মঙ্গলের ভূতাত্ত্বিক নমুনা সংগ্রহ ও অন্য গবেষণার জন্য দ্বিতীয় রোবোটিক গাড়িটি পাঠানো হবে ২০২০ সালে।
নাসার পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের দিকে মঙ্গলে যাত্রা করবে মানব অভিযাত্রী দল। ওদিকে গত মার্চ মাসে মিসিসিপির স্টেনিস স্পেস সেন্টারে মঙ্গল গ্রহে যাত্রার উপযোগী একটি রকেট পরীক্ষা করে নাসা। সুতরাং বলে দেওয়া যায় খুব শিগগিরই মানব সভ্যতা সাক্ষী হতে চলেছে মঙ্গলগ্রহ জয়ের।