এবারের লোকসভা নির্বাচনের পর মোদিকে এখন আর মানুষ ভয় পায় না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেছেন, লোকসভা ভোটের পর দেশের মানুষের ভয় কেটে গেছে। নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে মানুষ এখন আর ভয় পায় না। সংবিধান, ধর্ম ও বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর ওপর আক্রমণও মানুষ আর বরদাশত করছে না।
চার দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ডালাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক সমাবেশে গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তিনি যোগ দেন। সেখানে তিনি বলেন, বিজেপির আদর্শ বাঁধা আরএসএসের কাছে, যারা বিশ্বাস করে, ভারত মানে এক আদর্শ। কিন্তু কংগ্রেসের চিরায়ত বিশ্বাস, ভারত বহু মত, বহু আদর্শের সমাহার। কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি-আরএসএসের লড়াই এ নিয়েই। বহুত্ববাদ বনাম একদর্শী মতবাদ। এটা বিচারধারার লড়াই।
সেই লড়াইয়ের ফল কেমন, সেটাও রাহুল ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর যখন দেখা গেল বিজেপি সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় গরিষ্ঠতা পায়নি, সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে ভয় পাওয়া উধাও হয়ে গেল। এর কৃতিত্ব দেশের জনগণের। ফল প্রকাশের পরেই মানুষ ঠিক করে ফেলে, তারা বিজেপিকে ভয় পাবে না। প্রধানমন্ত্রীকে ভয় পাবে না। সংবিধানের ওপর আক্রমণ মেনে নেবে না। ’
কয়েক বছর ধরে রাহুল নিয়মিতভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন নীতিকে। বিজেপির ‘ঘৃণার রাজনীতিকে’। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানিকে। যুক্তরাষ্ট্র সফরেও তিনি সেই আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। ডালাসের ওই সমাবেশে ছাত্রছাত্রী প্রশ্ন করেছিলেন, ভারতে শ্রমবাজারে নারীর উপস্থিতি এত কম কেন। উত্তরে রাহুল সরাসরি দায়ী করেন আরএসএসের নীতিকে, বিজেপি যা অনুসরণ করে চলে।
তিনি বলেন, ‘আরএসএস-বিজেপির অনুসৃত নীতি এ জন্য অনেকটাই দায়ী। হিন্দুত্ববাদী ওই সংগঠন ও দল মনে করে, নারীদের ভূমিকা সীমাবদ্ধ থাকা উচিত সংসারে। তারা ঘরে থাকবেন। রান্নাবান্না করবেন। সন্তান লালন–পালন করবেন। কিন্তু কংগ্রেস মনে করে, পুরুষদের মতো নারীরাও সমানভাবে এগোবেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবেন। নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করবেন। লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে চলবেন। বিজেপির এ মনোভাবই শ্রমবাজারে নারী উপস্থিতি কমের কারণ। ’
এরপর ভারতের কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে রাহুলের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘একসময় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছিল উৎপাদনের কেন্দ্র। ক্রমেই জাপান, কোরিয়া সেদিকে নজর দেয়। এখন তার বেশিটা চলে গেছে চীনে। তারাই উৎপাদনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
আর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, ভারত তা চীনের হাতে তুলে দিয়েছে। কর্মসংস্থান বাড়াতে গেলে উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। শুধু মুখে বললে হবে না। তা হলে চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশিদের কাছে তা একচেটিয়া হয়ে যাবে। রাহুল বলেন, দক্ষতাকে সম্মান দিয়ে উৎপাদনের দিকে এগোলে ভারতও চীনের মোকাবিলা করতে পারবে। তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র তা দেখিয়েও দিয়েছে। ’