ক্লাস করতে নারাজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা!
নিউজ ডেস্ক:রাস্তা সংস্কার কাজে ব্যবহৃত মিকচার মেশিনের কালো ধোয়া বিকট শব্দ, পিচ ও বিটুমিনের দুর্গন্ধে বিদ্যালয় ছেড়েছে গাংনীর লক্ষি নারায়নপুর ধলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন যাবত বিদ্যালয় আঙ্গিনায় রাস্তা সংস্কার কাজে ব্যবহৃত পিচ ও বিটুমিন পোড়ানোর কাজ করছেন একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিচ ও বিটুমিন পোড়ানোর কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও তা মানেননি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, নওপাড়া- তেতুঁলবাড়িয়া সড়ক সংস্কার কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হেলাল এন্টার প্রাইজ। রাস্তার কাজে এখন সীলকোড ও পিচের কাজ বাকি। এ কাজে পিচ পোড়ানোর স্থান হিসেবে বেছে নেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার লক্ষি নারায়ণপুর ধলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা। এটি দখল করে জুতা সেন্ডেল ও প্লাস্টিক দিয়ে বিটুমিন জ্বালানোর কাজ করছেন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মিকচার মেশিনের শব্দ, কালো ধোয়া ও ছাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করছে। বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো ধোয়া কারণে বিদ্যালয় ছেড়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরাও বিদ্যালয় ছেড়ে সময় পার করছেন চায়ের দোকান বা অন্যত্র। কালো ধোয়া এলাকায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে বায়ু ও শব্দ দুষনে স্থানীয়দের নাভিস্বাশ এখন চরমে পৌঁছেছে। লক্ষি নারায়নপুর ধলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদা খাতুন জানান, দূর্গা পূজার ছুটির সময় বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তা সংস্কার সামগ্রী স্তুপ করে রাখে। কয়েকদিন যাবত পিচ ও বিটুমিন পোড়ানো শুরু করলেই শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বসতে না পারায় ৯০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন বিদ্যালয়ে আসছে। তারাও বেশিক্ষণ থাকছেনা। বিষয়টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানানো হলেও তারা তাদের কাজ বন্ধ করেননি। বাধ্য হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়। নিবার্হী অফিসার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা কৌশলে মিকচার মেশিনটি মাত্র ১০০ হাত দূরে সরিয়ে আবারো কাজ শুরু করে। ফলে আমাদের দূর্ভোগ থেকেই গেছে। শিক্ষার্থীরা শুধু নয় আমরা ঠিকমত বিদ্যালয়ে শব্দ, কালো ধোয়া ও দূর্গদ্ধের কারণে বসতে পারছি না। গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী রুহুল ইসলাম জানান, শিক্ষা ব্যহত হয় এমন কাজ করা যাবে না। সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্রও বিদ্যালয় আঙ্গিনায় রাখা যাবে না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে আমি বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা চালাচ্ছি। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল জানান, বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় বা তার আশপাশ এলাকায় পিচ পোড়ানো উচিৎ নয়। গত বুধবার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সকল সরঞ্জামাদি সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশ পাবার পরও কোন মালামাল সরানো হয়নি এবং পিচ পোড়ানো চলছে বলে জানানো হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী মেহেরপুর শহরের হেলাল মিয়া জানান, এর আগে ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমি এই কাজ করেছি। কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। তবে এখানে কাজের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত লোকজন স্থান নির্বাচনে ভুল করেছেন। ইউএনও স্যার কাজ বন্ধ করে মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য বললে আমরা কিছুদূর এগিয়ে মালামাল রেখেছি। কিন্তু এটা স্কুল আঙ্গিনার বাইরে হয়নি। ফলে কিছুটা সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু আদৌ কোন সমস্যা হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না।