বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২২জন আটক

৩ সপ্তায় আটক হয়েছে ২৩৬ জন, শত শত মানুষ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায়

নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি তাদের নজরদারি বাড়ালেও কোনোভাবেই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারছে না। বরং বাংলাদেশি বলে তাঁদের এ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চোরা পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। ওপারে শত শত মানুষ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল শনিবারও বাংলাদেশে ঢুকেছে ২২ জন নারী, শিশু ও পুরুষ। এই নিয়ে গত ৩ সপ্তায় ২৩৬ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে বিজিবি।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের ঝিনাইদহে অংশে ৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বিজিবি এ ৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত কঠোর নজরদারি করলেও চোরাপথে দালাল ধরে অনুপ্রেবশেকারীরা হরহামেশা ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশে। এদিকে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, একই উপজেলার মগদাশপুর ও মাঠপাড়া এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় শনিবার ২২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। শনিবার ভোর ৫টার দিকে তাঁদের আটক করা হয়। শনিবার দুপুরে আটক ব্যক্তিদের মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
খালিশপুর-৫৮ বিজিবির পক্ষে অতিরিক্ত উপপরিচালক কামরুল হাসানের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিজিবির নিয়মিত টহল দেওয়ার সময় ঝিনাইদহের মহেশপুর বিওপির এক শ থেকে দেড় শ গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে নিশ্চিন্তপুর কালভার্টের পাশ থেকে ভোর ৫টার দিকে ১৬ জন এবং জলুলি বিএপির মগদাশপুর মাঠ থেকে ৫ জন ও মাঠপাড়া থেকে একজনসহ মোট ২২ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে আটক করে। তারা বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে ও চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিল বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১১(গ) ধারায় আটককৃতদের মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। বিজিবির ভাষ্য, আটক হওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুর শহরের বাসিন্দা। আটককৃতরা বিজিবিকে জানিয়েছে, ভারতে জাতীয় নাগরিক তালিকার (এনআরসি) আতঙ্ক ও নানা চাপের কারণে তারা ভারত থাকতে পারছেন না।
বিজিবির সূত্রগুলো জানায়, কাঁটাতারবিহীন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ১১ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। কাঁটাতারবিহীন এলাকা দিয়েই বেশি অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে বিজিবি জানিয়েছে। এদিকে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তবর্তী ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে বিজিবিকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিজিবির হাতে আটক হওয়া ব্যক্তিরা জানান, ভারতে গিয়েছিলাম পাসপোর্টবিহীন অবস্থায়। এখন দালাল ধরে চলে এসেছি। তাদের ভাষ্য, ভারত সরকারের লোকজন তাদের বলেছে, দেখ, তোমরা তো কাজ করো, তোমরা মুসলিম, বাংলাদেশি। এ দেশে তোমাদের কাজ করতে দেওয়া হবে না। তোমরা যেখান থেকে এসেছ, সেখানে চলে যাও। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ আগেই গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, ভারত থেকে ফিরে আসারা দাবি করছেন তারা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে ছিল। ওখানে বাসা বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। এখন কিছু লোকজন তাদের খোঁজ করছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিল তারা তাদেরকে রাখতে পারবে না বলে জানিয়ে দিলে তারা চোরা পথে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিজিবির হাতে আটক হচ্ছেন।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular