নিউজ ডেস্ক:
পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক মহড়াকে বিশাল যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পেরেশেঙ্কো। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার মহড়া দেখলে মনে হবে যেন যুদ্ধপ্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
সম্প্রতি পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার বিশাল সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ছিল নাগরিক প্রতিরক্ষা মহড়াও। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ অংশ নেয়। পাশাপাশি পুরোদমে চলেছে সেনা মহড়াও।
তাদের মধ্যে রয়েছেন, দুই লাখেরও বেশি উদ্ধারকারী দলের সদস্য এবং সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও মহড়ায় অংশ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার, আঞ্চলিক প্রশাসক, স্থানীয় সরকার ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মচারীরা। রাশিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এতো বিশাল পরিসরে মহড়ার আয়োজন করা হলো।
শুধু তাই নয়, যুদ্ধ হলে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিশালাকৃতি ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে রাশিয়া। সেখানে মস্কোর এক কোটি ২০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে।
রাশিয়ার উপকূলে ব্যারেন্টস সি’র একটি ডুবোজাহাজ থেকে প্রথমবারের মতো উৎক্ষেপণ করা হয় বিশ্বের দ্রুততম টোপোল মিসাইল। গত বৃহস্পতিবার মোট তিনটি মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমের একটি দ্বীপ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় দ্বিতীয় মিসাইলটি। তৃতীয় মিসাইলটি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম। এটি উত্তর জাপানের ওখোত্স্ক সাগরে একটি ডুবোজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ঠিক সেই সময় রাশিয়ার শক্তি প্রদর্শনকে যুদ্ধের ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছে পশ্চিমের দেশগুলো। তবে একে রুটিন পরীক্ষা বলেই দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই ল্যাভেরভ।
ইতোমধ্যে সরকারি আমলা, কর্মী ও রাজনীতিকদের তাদের সন্তানদের বিদেশের স্কুল থেকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কূটনীতিকদের আত্মীয়স্বজনকেও দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব ঘটনা সাধারণত কোনো বড় যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে নেওয়া হয়। একবার যদি রাশিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্মুখ সমরে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি বিশ্বযুদ্ধের দিকেই গড়াবে বলে মনে করছেন অনেকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টর এ ঘোষণা এজন্য অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক মনে হয়নি।
সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট