নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিদেশে পাচার করা জিয়া পরিবারের সম্পদ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে তাঁদের বিচারের আওতায় আনার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান।
শুক্রবার বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের জবাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের সম্পদ পাচারের বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কিভাবে দায়িত্বজ্ঞাণহীন আপনাদের তা প্রমাণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সত্য কথা বলার মত সৎ সাহস রয়েছে। এ জন্য তিনি অকপটে সত্য কথা বলেছেন। শেখ হাসিনা তথ্য প্রমাণ ছাড়া কোন কথা বলেন নি। তিনি যা বলেছেন তা জেনে শুনেই বলেছেন।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিদেশে সম্পদ পাচারের জন্য জিয়া পরিবারকে শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও পাচারের দায়ে তাঁদের বিচারের মুখোমুখী হতে হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপুমনি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,স্বাস্থ বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আইন সম্পাদক এডভোকেট শ ম রেজাউল হক ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা দেশে যেমন সর্বজনবিদিত তেমনি দেশের বাইরেও স্বীকৃত। বিশ্বের ১৭৩ টি দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে সততার দিক থেকে তিনি বিশ্বের তৃতীয়। শেখ হাসিনার সৎ সরকার প্রধান হিসেবে নাম আসার পর থেকেই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তাঁরা তাদের মিথ্যাচারের পুরানো ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো শুরু করেছেন।
কাদের বলেন, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক¤ো^ডিয়া সফর শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর প্রতিক্রিয়ায় যে বক্তব্য রেখেছেন তা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্ঠা ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব পদ্মা সেতু প্রকল্প সহ বিভিন্ন মেঘা প্রকল্পে দুর্নীতি খোজার চেষ্ঠা করেছেন। বিশ্ব ব্যাংক যেখানে দুর্নীতি খুজে পায় নি সেখানে তার এ অভিযোগ কতটা হাস্যকর তা দেশের মানুষ জানে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের দুর্নীতির বিষয়ে স্বত:প্রনোদিত হয়ে বলেন নি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন। আর তাতেই বিএনপি গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘ সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে সেদেশের ১১ প্রিন্সসহ কিছু মন্ত্রীর নাম উঠে আসে। ওই অভিযানে আটক এক প্রিন্স বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তাঁর পুত্র তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার ভাই প্রয়াত সাঈদ ইস্কান্দারের সেদেশে বিনিয়োগ থাকার কথা স্বীকার করে।’
তিনি বলেন, ‘ সৌদি আরব ও কাতারসহ বিশ্বের ১২টি দেশে বানিজ্যিক বিতানসহ পেট্রো কেমিক্যাল ব্যবসায় জিয়া পরিবারের ১২ হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে বলে বিদেশী গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ পায়।
এ সময় কাদের যুক্তরাজ্যের লন্ডন ভিত্তিক প্যারাডাইস পেপার, গ্লোবাল অ্যাসেট রিকোভারী হ্যান্ডবুকে প্রকাশিত জিয়া পরিবারের বিদেশে পাচার করা সম্পদের প্রতিবেদন সাংবাদিকদের দেখান।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলসহ সরকারের প্রতিটি মেঘা প্রকল্প সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলো নিয়ে বিএনপি দুর্নীতির যে অভিযোগ এনেছে তা বিএনপিকেই প্রমাণ করতে হবে। তা করতে না পারলে তাদের বিচারের মুখোমুখী হতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, দুদক ইতোমধ্যে জিয়া পরিবারের বিদেশের পাচার করা সম্পদের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার জন্যই এসব অর্থ কেলেংকারীর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত।
(বাসস)