নিউজ ডেস্ক:
হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দুই বিচারপতির স্বাক্ষর জাল করে করে মিথ্যা আগাম জামিন দেখানোর ঘটনায় পাঁচ আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে নথি জালিয়াতির ঘটনায় কারা জড়িত তা তদন্ত করে বের করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ৬ মার্চ বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার নম্বর-৭। জি. আর নম্বর-৬৭/১৭। ওই মামলায় আসামি করা হয় ২৩ জনকে। গত ৮ জুন মামলার আসামি শিবগঞ্জ থানার দোবিলা গ্রামের মো. তৈয়ব আলী, বিহার পূর্বপাড়া গ্রামের মনতানজার রহমান, বিহার সোনাপাড়া গ্রামের মিনহাজ, রয়নগর কাজীপাড়া গ্রামের মো. সানাউল সানা ও বাসু বিহার গ্রামের মো. মিজান হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চান। হত্যার মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ থাকায় হাইকোর্ট তাদের জামিন না মঞ্জুর করে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয়। এই মামলায় আসামিদের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদনটি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট মো. মতিউর রহমান উজ্জ্বল। জামিন নামঞ্জুরের পরেও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের স্বাক্ষর জাল করে প্রস্তুত করা জামিন মঞ্জুরের আদেশ।
এ বিষয়ে আসামিদের আইনজীবী মতিউর রহমান উজ্জ্বল বলেন, জামিন নাকচের প্রায় দুই মাস পর রোববার আসামিরা আমার সঙ্গে দেখা করে জামিনের আদেশের একটি কপি দেখান। এরপর তারা ওই আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি তুলে দেওয়ার দাবি করে। কিন্তু আমি তাদেরকে বলি জামিন আবেদন হাইকোর্ট নাকচ করেছে। কিন্তু তারা আমার কথা বিশ্বাস করতে চাইনি। পরে আমি আমার এক জুনিয়র আইনজীবীকে সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠিয়ে জামিনের বিষয়ে খোঁজ নেই। তখন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা নথি পর্যালোচনা করে দেখতে পান যে, আদেশের যে কপি আসামিরা নিয়ে এসেছেন তাতে যে বিবিধ মামলার নাম্বার উল্লেখ করা হয়েছে সেটি বগুড়ার নয়, কুমিল্লার একটি মামলার। সেখানে একজন আসামির নিয়মিত জামিনের বিষয়ে আদেশ দেওয়া হয়েছে। কোন আগাম জামিনের আবেদন ছিল না। এরপর ওইদিনই আমি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনেছিলাম। পুরো ঘটনা তুলে ধরার পর হাইকোর্ট আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উপরোক্ত আদেশ দেয়। অ্যাডভোকেট মতিউর জানান, এ জালিয়াতির ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বরাবর একটি অভিযোগও দাখিল করা হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, হাইকোর্ট আসামিদের জামিন দেয়নি। ওইদিন জামিন না মঞ্জুর করে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছিল। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ায় হাইকোর্ট অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।