নিউজ ডেস্ক:
বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ওসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেন। এমনটাই জানাচ্ছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট আলি সৌফান। ৯/১১ হামলার পর থেকে আটক আল কায়দা নেতাদের জেরার করার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আলি।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আলি জানিয়েছেন লাদেন পুত্র হামজা বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলার ছক কষছেন। হামজা নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছে, তার বাবা যেভাবে গণহত্যার মাধ্যমে সন্ত্রাস ছড়াত, সেও একই পথ বেছে নেবে। আর এই লক্ষ্যে আইএস–সহ গোটা বিশ্বের সবকটি ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় গড়তে চায় হামজা।
পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের গুপ্ত আস্তানায় মার্কিন কম্যান্ডোরা যখন লাদেনকে হত্যা করেছিল, তখন হামজার বয়স ছিল ২২। এখন তার বয়স ২৮। যদিও লাদেনকে খতম করার অভিযানের সময় তার সঙ্গে ছিল না হামজা। তার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই দেখা হয়নি পিতাপুত্রের মধ্যে। বিপদের আশঙ্কায় আফগানিস্তানের গোপন আস্তানায় ছেলেকে লুকিয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল লাদেন। সঙ্গে এও বলা ছিল, কোনও দিন যদি আকস্মাৎ মৃত্যু হয় লাদেনের, তাহলে বাবার হয়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ যেন হামজাই চালিয়ে যায়।
ছেলের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে লাদেনের বার্তা ছিল, ‘সারা জীবনে তোমাকে যা বলেছি, যা শিখিয়েছি, যার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, সেগুলো ভুলো না। ’ সৌফানের দাবি, এর মাধ্যমে সন্ত্রাস চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতই দিয়েছিল লাদেন। জবাবে হামজা বাবাকে লিখেছিল, ‘জেহাদের পথ থেকে আমি সরব না। ’ হামজার মধ্যে বাবার মতোই দক্ষ সাংগঠনিক ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন সৌফান।
তিনি বলেছেন, ‘হামজা ছোট থেকেই দারুণ পরিণতমনস্ক। অনেক প্রচারমূলক ভিডিওতে তাকে বন্দুক হাতে নিয়ে দেখা গিয়েছে। যখন আইএসের মতো অপেক্ষাকৃত নবীন জঙ্গি গোষ্ঠী বিশ্ব জুড়ে প্রভাব বিস্তার করছে, তখন আর আল কায়দার প্রবীণ নেতাদের উপর ভরসা না করে হামজাই দলের হাল ধরতে চাইছে। লাদেনের পরে নতুন মুখ হয়ে উঠতে চাইছে সে। ’
সৌফান আরও জানান, ‘হামজাকে আর উপেক্ষা করা হলে ভুল হবে। সে ইতিমধ্যেই আল কায়দার পোস্টার বয়। দলে তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে। তার কণ্ঠস্বর এবং বাচনভঙ্গি অনেকটাই লাদেনের মতো। সেটাও তার পক্ষে যাচ্ছে। অবশ্য জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য এটা সে সচেতনভাবেও করে থাকতে পারে। ’
ইতিমধ্যেই সরাসরি আমেরিকাকে হুমকি দিয়ে একটি অডিও মেসেজ পোস্ট করেছে হামজা। সেখানে সে বলেছে, ‘আমেরিকার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদীদের যুদ্ধ জারি থাকবে। আমরা হামলা চালিয়ে যাব। দেশে–বিদেশে হামলা করব। কোনও মুসলিম দেশ আমেরিকাকে সহ্য করবে না। ওসামাকে মারার প্রতিশোধ নয়, যারা ইসলামকে অপমান করেছে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।