নিউজ ডেস্ক:
নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত হওয়ায় জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গত বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজস্ব আয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হবে। এটা পূরণ করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে কী করণীয় তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে শিগগিরই এর বিকল্প নির্ধারণ করা হবে।
মুহিত বলেন, ভ্যাট আইন প্রত্যাহার করায় ঘাটতি মেটাতে নতুন করে কী করতে হবে তা এখানো জানি না। বিষয়টি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে খুব শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যখন সিদ্ধান্ত হবে তখন সবাইকে অবশ্যই জানাব।
ভ্যাট অনলাইন ব্যবস্থা কার্যকর থাকা প্রসঙ্গে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ভ্যাট ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ। ভ্যাট অনলাইন ব্যবস্থার কার্যকারিতা অব্যাহত থাকবে। যে আইনের আওতায় এ ব্যবস্থা প্রচলিত আছে সে আইনেই এটা কার্যকর থাকবে।
মঙ্গলবার গুলশান হামলায় নিহতদের পরিবারকে সহায়তায় অর্থ ছাড় শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরই মধ্যে অর্থ বিভাগ থেকে অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে।
পরে তিনি বলেন, প্রতি পরিবারের জন্য ১৫ হাজার ইয়েন করে দেওয়া হবে। তবে সবাই ক্ষতিপূরণের এ অর্থ নেবে কিনা সেটা বলা মুশকিল। ইতালির যারা নিহত হয়েছেন শুনেছি তাদের বেশির ভাগই গরিব। এখানে ছোট ছোট জায়গায় কাজ করতেন। তাদের পরিবার থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছিল। তবে জাপানের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এ অর্থ নেবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু ইতালির নয়জন নয়, সব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সব পরিবার যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন। এসব বিষয়ে তিনি বরাবরই অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সময় পরিবর্তন হতে পারে অর্থবছরের
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) পুরোপুরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনেক দিন ধরেই দেশের অর্থবছরের সময় পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার এ বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, আমি বহুদিন ধরে কনভিন্সড ছিলাম যে বাজেটের সময়টা জুন-জুলাই ঠিক আছে। কিন্তু এখন নতুন নতুন আইডিয়া আসছে। আগে প্রস্তাব এসেছিল এপ্রিল-মার্চ। এখন কেউ কেউ জানুয়ারি-ডিসেম্বরের কথাও বলছেন। এটা নিয়ে দেশে পাবলিক ডিবেট হতে পারে। আপনারা আরও ভালো ভালো আইডিয়া দিতে পারেন।
গত বুধবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
এর আগে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) পুরোপুরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থবছরের সময় পরিবর্তনের প্রস্তাব দেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, আমাদের দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই থেকে। তখন বর্ষাকাল। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই মার্চে কিংবা জানুয়ারিতে এ অর্থবছর শুরু হওয়া প্রয়োজন।