নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে জর্জিয়ার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুরোধ জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফেডারেশন ভবনের সভাকক্ষে জর্জিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এফবিসিসিআই নেতাদের আলোচনা সভায় অনুরোধ জানানো হয়। সভায় জর্জিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ডেভিড জালাগানিয়া জর্জিয়া প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জর্জিয়ার রাষ্ট্রদূত আর্চিল জুলিয়াসভিলি, বাংলাদেশে জর্জিয়ার অনারারি কনসাল রিয়াদ মাহমুদ, এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফসহ পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শফিউল ইসলাম তার বক্তব্যে জর্জিয়া প্রতিনিধিদলকে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বর্ধনশীল এবং আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি ঘটছে। বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে এবং গত বছর ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এ সময় তিনি বর্তমান সরকারের উদার ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগনীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে জর্জিয়া প্রতিনিধিদলকে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে (এসইজেড) চীন ও ভারতের মত বিশেষায়িত অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ ছাড়া সরকার প্রদত্ত ‘ট্যাক্স হলিডে’ এবং বিভিন্ন দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘কোটামুক্ত সুবিধা’ গ্রহণ করে জর্জিয়া ব্যবসায়িরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন বলেও উল্লেখ করেন মহিউদ্দিন।
সভায় জর্জিয়ার মন্ত্রী ডেভিড জালাগানিয়া আশা প্রকাশ করে বলেন, জর্জিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য তেমন উল্লেখযোগ্য না হলেও আজ এফবিসিসিআই এবং জর্জিয়া চেম্বারের মধ্যে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে তার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। জর্জিয়ার মন্ত্রী ঢাকা এবং তিবলিশ এর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণের জন্য বাংলাদেশ ও জর্জিয়া একসঙ্গে কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সভা শেষে এফবিসিসিআই এবং জর্জিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর স্বাক্ষরিত হয়। জর্জিয়ার মন্ত্রী ডেভিড জালাগানিয়া এবং এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সমঝোতা স্বাক্ষর করেন।
এ সমঝোতা স্বাক্ষরের ফলে এফবিসিসিআই এবং জর্জিয়া চেম্বার তথ্য বিনিমিয় এবং কারিগরি, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণে কাজ করবে। এ ছাড়া তারা বিশেষজ্ঞ বিনিময় এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত পরিসংখ্যান বিনিময় ও প্রশিক্ষণ আয়োজনের উদ্যোগ নিবে এবং দুপক্ষ অর্থনৈতিক চুক্তি এবং যৌথ উদ্যোগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ জর্জিয়ায় ১ দশমিক ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে কিন্তু এ সময়ে জর্জিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো পণ্য আমদানি করা হয়নি। জর্জিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম-টেক্সটাইল, পেপার ও পেপার বোর্ড এবং নিটওয়্যার। আর জর্জিয়া থেকে মূলত তুলা, কার্পেটসহ অন্যান্য ফ্লোর কভারিং, পারমাণবিক চুল্লি, বয়লার, মেশিনারি ও মেশিনারি যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়।