সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি পোস্টে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সের টাকা বন্যার্তদের মাঝে দেওয়া হবে। অনেকে টাকা দান করা করা হয়েছে বলেও গুজব ছড়িয়েছেন। এমন হাজারো ফেসবুক পোস্ট গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত থেকে নেটিজেনদের টাইমলাইন ঘুরছে। তবে শেয়ার করা এই তথ্য সঠিক নয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যা কবলিতের মাঝে অনুদান দেওয়ার বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ছড়িয়েছে তা গুজব।
এই বিষয়ে আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) পাগলা মসজিদ কমিটি ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দানের বিষয়ে কেউ আবেদন বা প্রস্তাব রাখেনি। মসজিদের দানের টাকা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ- এটা গুজব। মসজিদে দানের টাকা বন্যার্তদের বিতরণ করতে হলে শরীয়ত ও রাষ্ট্রীয় নিয়ম মেনে মসজিদ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিকে ভারতীয় বাঁধ খুলে দেওয়া ও অতিবৃষ্টিতে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানকার জীবনব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে সকলে এক হয়ে সাহায্য করার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে শুরু করে প্রতিটি শহরের অলিগলিতে বন্যার্তের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য মানুষ এগিয়ে আসছে। বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাগলা মসজিদের দানের টাকা বিতরণের দাবি জানিয়ে আসছে নেটিজেনরা।
এদিকে সর্বশেষ শনিবার (১৭ আগস্ট) কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে ৩ মাস ২৬ দিন পর নয়টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে সেই টাকার পরিমাণ ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা দাঁড়ায়। এছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও ছিল।
এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। সেসময় রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। প্রতিবারই পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুললে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়।