বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

বন্যায় বেহাল গুজরাট-আহমেদাবাদ, মরার ওপর খাঁড়ার ঘা ‘ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা’

লাগাতার বর্ষণে বেহাল দশা গুজরাটের। অন্যদিকে লেক সিটিতে পরিণত হয়েছে আহমেদাবাদ। রাজ্যজুড়ে ভয়াবহ এ বন্যায় এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৩৫জনের মৃত্যুর খবর। পানি কমার কোনো পূর্বাভাস না পাওয়া গেলেও মরার ওপর খাঁড়ার ঘার মতো দেয়া হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস।

বন্যায় নিজ রাজ্য ডুবে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মডেল সিটি খ্যাত মোদির আহমেদাবাদের অবস্থা ভয়াবহ। গত কয়দিনের ভারী বৃষ্টিতে শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। উপহাস করে অনেকে বলছেন, দেশের প্রথম ‘লেক সিটি’ বানিয়েছেন মোদি।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে লাগাতার বর্ষণে নাজেহাল অবস্থা মোদিরাজ্য গুজরাটে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অন্তত ১৪০টি জলাধার ও বাধের পানি। গলা সমান পানিতে নাকানি-চুবানি খাচ্ছে রাজ্যের বাসিন্দারা। কোনো কোনো অঞ্চল আবার ১০ থেকে ১২ ফুট পানির নিচে।

বানের পানিতে তলিয়েছে রাস্তাঘাট, ডুবেছে বাড়িঘর। ভেসে গেছে, গোটা পুলিশ বক্সও। বিপর্যস্ত গুজরাটের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ ট্রেন চলাচল। এরইমধ্যে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুতের দেখা নেই কোনো কোনো স্থানে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। দুষছেন, মোদি কর্তৃপক্ষকে। অভিযোগ- বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসছেন না কেউ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমার আট মাস বয়সী সন্তান আছে। অ্যাসথমা রোগি মাও আছেন। যার প্রতিদিনই অক্সিজেন সাপোর্ট লাগে। কিন্তু কয়দিন ধরে বিদ্যুতের দেখা নেই। সে তার নেবুলাইজার নিতে পারছেন না। নিজেদেরকেই কোনোভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। কেউ আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না।

আরেকজন বলেন, আমি একজন অটোরিকশা চালক। আমি দিন আনি দিন খাই। রোজ আমার পরিবারের জন্য খাবার যোগাড় করতে হয়। এখন আমি কি করব? এক সপ্তাহ ধরে অটোরিকশা চালাতে পারছি না।

শুধু তাই নয়, বন্যাদুর্গতদের অভিযোগ, স্মার্ট সিটির নামে কিছুই করতে পারেনি মোদি প্রশাসন। শুধুই আশাই দেখিয়েছেন।

স্মার্ট সিটির নামে এখানে কিছুই নেই জানিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখানে কোনো আধুনিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। এবং এটাই প্রথমবার না। বছরের পর বছর এটি হয়ে আসছে।

এদিকে, নদীর জলের সাথে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে একাধিক কুমির। বেশ কিছু ভিডিওতে সেই চিত্র ধরা পড়েছে।

চলমান এ বন্যা পরিস্থিতিতে ঘরছাড়া হয়েছে রাজ্যের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে। এর ওপর আবার দেয়া হয়েছে সাইক্লোনের সতর্কতা। যদিও বন্যা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি প্রধানমন্ত্রী মোদি।

উল্লেখ্য, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যে বন্যা নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই রুটিনমাফিক বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় অঞ্চলটি।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular