মীরসরাইয়ে গত আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় হাবিলদারবাসা খাদ্য গুদামটি ৫ ফুটের অধিক পানিতে ডুবে বিপুল পরিমাণ চাল পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারি এই খাদ্য গুদামের বিপুল পরিমাণ চাল (আতপ এবং সিদ্ধ মিলিয়ে ৭৯ মেট্রিক টন) একেবারেই খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে বলে সংশ্লিষ্ট খাদ্য গুদামের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলায় দুটি খাদ্য গুদাম রয়েছে। এরমধ্যে হাবিলদারবাসা খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন। গত আগস্টে টানা ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও ফেনী নদীর প্লাবনে মীরসরাই উপজেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এসময় মীরসরাইয়ের হাবিলদারবাসা খাদ্য গুদাম প্রায় ৫ ফুট পানির নিচে চলে যায়। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় গুদাম থেকে সব চাল সরানো সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। এই বন্যায় ৭৯ মেট্রিক টন চাল পানিতে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া এসব চাল নিয়ে বিপাকে পড়ে জেলা খাদ্য অফিস। শেষ পর্যন্ত খাদ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পচে যাওয়া চালগুলো হাঁস–মুরগী ও মাছের খাদ্য কিংবা জৈব সার হিসেবে বিক্রির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতি টন চালের সরকারি ক্রয় মূল্য ৪৪ হাজার টাকা করে। সরকারি ক্রয় মূল্য অনুযায়ী ৭৯ মেট্রিক টন চালের দাম প্রায় ৩৫ লাখ টাকা (৩৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা)।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন আজাদীকে বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় মীরসরাই উপজেলার হাবিলদারবাসা এলএসডি (খাদ্য গুদাম) প্রায় ৫ ফুটের উপরে পানিতে ডুবে গিয়েছিল। বন্যার পানিতে ডুবে খাদ্য গুদামের আতপ এবং সিদ্ধ মিলে ৭৯ মেট্রিক টন চাল নষ্ট হয়েছে। এগুলো একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। মাছের খাদ্য হিসেবে অথবা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এই চালগুলো আমরা মাছের খাদ্যে মিশ্রণ করে এবং জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের জন্য আগ্রহীদের মাঝে নিলাম আহ্বান করেছি।
এই ব্যাপারে খাদ্য অধিদপ্তরের গত ২২ অক্টোবর ৫৬৯ নম্বর স্মারকমূলে মীরসরাই উপজেলার হাবিলদারবাসা এলএসডিতে বন্যায় বিনষ্ট ‘সাধারণ বিলি বিতরণ এবং মানুষের খাদ্যের উপযোগী নয়; তবে হাঁস–মুরগী ও মাছের খাদ্য হিসেবে কিংবা জৈব সারের সাথে জমিতে ব্যবহারযোগ্য’ খাদ্যশস্য হিসেবে নিলামে বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে হাঁস–মুরগী ও মাছের খাদ্য কিংবা জৈব সার হিসেবে বিক্রির জন্য আহ্বানকৃত টেন্ডারে উল্লেখ করা হয় মোট ৩৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং ৪৫ দশমিক ৮৯৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দরপত্র ক্রয় ও দাখিলের জন্য সময় দেয়া হয়েছে দুইদিন। আগামী ৫ অক্টোবর দরপত্র দাখিল ও খোলার দিন।