নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আড়াই মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ফের তালা ঝুলানোর ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকালে সাধারণ শ্রমিকরা ভবনে প্রবেশের সময় এক রিঙ্গিত করে আদায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দূতাবাস কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের দ্বন্দ্ব বাধে। এরই সূত্র ধরে হাইকমিশনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ পথে আধা ঘণ্টা তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়। এসময় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (বাণিজ্য) ধনঞ্জয় কুমারকে নিরাপত্তাকর্মীরা লাঞ্ছিত করে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, হাইকমিশনের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই সকাল থেকে হাই কমিশনে সেবা নিতে আসা প্রবাসীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ রিঙ্গিত করে চাঁদা তুলতে থাকে ভবন কর্তৃপক্ষ। টাকা তোলার খবর জানতে পেরে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। পরে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে হাইকমিশন কর্মকর্তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা ধস্তাধস্তিতে রূপ নেয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ধ্বস্তাধস্তির সময় নিরাপত্তাকর্মীরা হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। তা দেখে সাধারণ প্রবাসীরা উত্তেজিত হয়ে নিরাপত্তাকর্মীকে মারতে উদ্যত হলে ওই কর্মকর্তা তাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। স্থানীয় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে ভবন মালিকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।
হাইকমিশন কর্মকর্তা এস কে শাহীন বলেন, আমরা গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সাধারণ প্রবাসীদের সেবায় আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। এখানে সেবা নিতে আসা প্রবাসীদের ওপর হয়রানি বন্ধে বাংলাদেশ হাইকমিশন সবধরনের ব্যবস্থা নেবে।
এ বছরের শুরুতেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে আধুনিক সেবা নিয়ে নতুন ভবনে সরানো হয় বাংলাদেশ হাইকমিশন। সেবার মান বাড়লেও পারিপার্শ্বিক সমস্যায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দূতাবাসে সেবা নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
হাইকমিশনে সেবা নিতে আসা প্রবাসীদের লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে মূলভবনে ঢোকানোর দায়িত্ব দেয়া হয় ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের। শৃঙ্খলা কিছুটা ফিরে আসলেও প্রায় প্রতিদিনই নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন সাধারণ প্রবাসীরা।
কথায় কথায় গায়ে হাত তোলা, চড়, থাপ্পড় তো রয়েছেই। কখনো কখনো হাইকমিশন চত্বর থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটি এক নেতা জানান, ভবন মালিকের সঙ্গে ভাড়া সংক্রান্ত হাই কমিশনের করা চুক্তিপত্র গোঁজামিলে ভরা। ফলে ভবন কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন পরপর বিভিন্ন ইস্যুতে চড়াও হয় হাইকমিশনের ওপর। এ বিষয়টি নিয়ে এখনই স্থায়ী সমাধানে না আসলে ভবিষ্যতে আরো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে গেলো মে মাসে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় পাঁচ ঘন্টা প্রবেশদ্বার তালাবদ্ধ রাখে ভবন কর্তৃপক্ষ।