ধর্ষক প্রেমিক উজ্জল পালালেও আরেক ধর্ষক মাসুদ আটক : গণধোলাই
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা গ্রামে প্রেমিক ও তার বন্ধু মিলে একটি আমবাগানে নিয়ে এক যুবতীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টার দিকে মাখডাঙ্গা গ্রামের মসজিদপাড়ার ছৈরদ্দীনের আমবাগানে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ওই যুবতীর চিৎকারে অভিযুক্ত কথিত প্রেমিক উজ্জ্বল পালিয়ে পার পেলেও তার বন্ধু মাসুদ আটক করে এলাকাবাসী। এসময় ধর্ষক মাসুদকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত মাসুদকে আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নেয়। ধর্ষণের শিকার ওই যুবতী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের মাখালডাঙ্গা গ্রামের মসজিদপাড়ার জনৈক এক ব্যক্তির কন্যা। এ ঘটনায় নির্যাতিতা যুবতীর পিতা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান। আজ মঙ্গলবার পাশবিক নির্যাতনের শিকার ওই যুবতীর ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গেছে।
ধর্ষণের শিকার ওই যুবতী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের মাঝেরপাড়ার বাবলুর ছেলে উজ্জ্বল হোসেনের সাথে গত ২ মাস যাবত মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই মধ্যে গতকাল বিকালে প্রেমিক উজ্জ্বল ও তার বন্ধু একই এলাকার সোনা ম-লের ছেলে মাসুদ রানাকে সাথে করে মাখালডাঙ্গার মসজিদপাড়ায় আমার সাথে দেখা করতে আসে। এসময় উজ্জল ও তার তার বন্ধু মাসুদ বেড়াতে যাবার কথা বলে একই এলাকার ছৈরদ্দীনের আমবাগানে আমাকে নিয়ে যায়। এরপর জোর করে প্রথমে প্রেমিক উজ্জ্বল আমাকে ধর্ষণ করে। এসময় উজ্জ্বল বলে আমার বন্ধু মাসুদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক না করলে আমি তোমাকে বিয়ে করবো না। আমি মাসুদের সাথে শারিরীক সম্পর্কে রাজী না হলে মাসুদও আমাকে জোর করে ধর্ষণ করে। এসময় আমি চিৎকার খুব কান্নাকাটি ও চেচামেচি করতে থাকলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে জুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে। এসময় আমার প্রেমিক উজ্জ্বল পালিয়ে গেলেও তার বন্ধু মাসুদ এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়। এভাবে ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে কান্নায় ভেঙে পড়ে ধর্ষণের শিকার ওই যুবতী।
পরে অভিযুক্ত মাসুদকে গণধোলাই শেষে এলাকার মইদুলের বাড়িতে আটকিয়ে রাখে এলাকাবাসী। এ ঘটনার খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার উপ-পরিদর্শক সোহানুর হক সোহান ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে থানা হেফাজতে নেয় এবং অভিযুক্ত ধর্ষক মাসুদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
ধর্ষণের শিকার ওই যুবতীর বৃদ্ধ বাবা বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি এসে লোক মারফতে ঘটনা শুনেছি। এমন জঘন্য ঘটনায় আমার মেয়ের বিচার চাই। মামলার কথা বললে তিনি বলেন, আমার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আছেন, তারা যা বলবেন, আমি তাই করবো। তবে আমি এর বিচার চাই।
এলাকাবাসি বলেন, সোমবার বিকাল ৪টার দিকে মাখালডাঙ্গা গ্রামের মসজিদপাড়ার ছৈরদ্দীনের আমবাগান থেকে একটা মেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়ে এগিয়ে যান এলাকার সৈয়দ আলী ম-লের ছেলে আমির হামজা। পরে লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে ধর্ষণের শিকার ওই যুবতীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ধর্ষক প্রেমিক উজ্জ্বল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও প্রেমিকের বন্ধু ধর্ষক মাসুদকে ধরে ফেলতে আমরা সক্ষম হয়। এলাকাবাসি আরো বলেন, মাস খানেক আগে প্রেমিক উজ্জ্বল ধর্ষণের শিকার ওই যুবতীকে নিয়ে বাড়ীতে উঠে। পরে ওই দিনই দু’পক্ষের সমবোঝায় বিষয়টি মিমাংসা করে মেয়েকে বাড়ি ফেরানো হয়। এদিকে, গত রাতেই ধর্ষণের শিকার ওই যুবতীর পিতা বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
এবিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল দিলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান এই প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনা থানা থেকে যা শুনে গেলেন, তা আর বলার কি দরকার আছে। সংবাদের প্রয়োজনে ওসির বক্তব্য তার নিজ মুখ থেকে শোনা প্রয়োজন এই কথা প্রতিবেদক জানালে তিনি আরো বলেন, অতো শোনা লাগবে না, যা শুনেছেন তাই। এসময় তিনি আরো বলেন, কাল (আজ) ভিকটিমের ডাক্তারী পরিক্ষা করা হবে। মামলা কি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতেই অভিযুক্তদের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হবে।