এক হাজার তিনশ ৮০ কোটি বছর ধরে ছায়াপথ, তারা ও মহাজাগতিক কাঠামোর এক বিশাল ও জটিল জালে পরিণত হয়েছে মহাবিশ্ব। তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, মহাবিশ্বে পদার্থ যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তা বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়ে কম ‘অগোছালো’।
‘ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া’র গবেষক জোশুয়া কিম ও ম্যাথিউ মাধবচেরিলের নেতৃত্বে এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে। তাদের এ আবিষ্কার মহাবিশ্ব কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে সে সম্পর্কে নতুন ধারণা দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘জার্নাল অফ কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকল ফিজিক্স’-এ। গবেষণায় দুই ধরনের উৎস থেকে পাওয়া ডেটার তুলনা করেছেন গবেষকরা।
‘কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড’ বা সিএমবি নামে পরিচিত এই প্রাচীন আলোটি মহাবিশ্বের ‘শৈশবের ছবি’ দিয়েছে বিজ্ঞানীদের।
দ্বিতীয়টি, অ্যারিজোনার ‘ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইনস্ট্রুমেন্ট’ বা ডিইএসআই, যেটি লাখ লাখ ছায়াপথ গবেষণা করে মহাবিশ্বের বর্তমান কাঠামোর একটি ম্যাপ তৈরি করেছে।
এসব ডেটাকে একসঙ্গে করে কোটি কোটি বছর ধরে মহাবিশ্বের বিভিন্ন পদার্থ কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তা শনাক্ত করেছেন গবেষকরা।
‘কসমিক সিটি স্ক্যান’-এর মতো কাজ করেছে গবেষণার এ উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি, যা মহাবিশ্বের ইতিহাসের কিছু অংশ নিয়ে পরীক্ষা ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পদার্থ কীভাবে একসঙ্গে হয়েছে তা ট্র্যাক করতে সাহায্য করেছে বিজ্ঞানীদের। আদি মহাবিশ্বের আলো মহাকাশের মধ্যদিয়ে ভ্রমণ করার সঙ্গে সঙ্গে তা ছায়াপথ গুচ্ছর মতো বিশাল আকারের কাঠামোর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বাঁক নেয়। আর এ বাঁক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন, পুরো মহাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পদার্থ কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে।
গবেষণার এসব ফলাফলকে ডিইএসআই টেলিস্কোপের ছায়াপথের ম্যাপের সঙ্গে তুলনা করেছেন গবেষকরা। এটা অনেকটা ছোটবেকলায় স্কুলের ইয়ারবুকে সবার ছবি একসঙ্গে দেখার মতো। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ছায়াপথ মহাবিশ্বে কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ছোট হলেও মহাবিশ্বের অদ্ভুত এক অমিল প্রকাশ পেয়েছে এসব ডেটায়।
বিজ্ঞানীদের আগের বিভিন্ন মডেলের পূর্বাভাসের চেয়ে কিছুটা কম আগোছালো হয়েছে মহাবিশ্ব, বিশেষ করে চারশ কোটি বছরে।
নতুন পদার্থবিদ্যা নিশ্চিত করার জন্য এ অমিল খুব বড় না হলেও বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাজাগতিক কাঠামো গঠনে আমাদের ধারণার চেয়েও বড় ভূমিকা রাখতে পারে ডার্ক এনার্জির মতো বিভিন্ন মহাজাগতিক শক্তি।
সূত্র: বিডি নিউজ