নিউজ ডেস্ক:
স্মার্টফোন আসার পর থেকে সব মানুশের মধ্যে অদ্ভুত পরিবর্তন এসেছে। রাস্তায় স্বাভাবিক ভাবে মানুষের হাঁটাচলা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া পর্যন্ত। অফিস কর্মী এবং অল্পবয়স্করা রাস্তায় ৮০ বছরের বয়স্ক মানুষের মতো হাঁটছেন, কারণ তারা যাতায়াতের সময় কেউ ই-মেল, মেসেজ চেক করছেন আবার কেউ সোশ্যাল সাইট ঘাটছেন। এমনই অভিমত গবেষকদের।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রাস্তায় হাঁটাচলার সময় স্ক্রিনের দিকে দৃষ্টি থাকায় মানুষের হাঁটা আরো ধীরগতির হয়ে গিয়েছে। এই পরিবর্তনটি দীর্ঘমেয়াদে পিঠের এবং ঘাড়ের সমস্যার কারণ হতে পারে।
কেমব্রিজের অ্যাংলিয়া রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার প্রধান লেখক বলেন, স্মার্টফোন ইউজারদের হাঁটাচলা ৮০ বছর বয়সি মানুষের মত। গবেষকরা দেখেছেন, যারা ম্যাসেজ লিখতে লিখতে হাঁটে তাদের হাঁটার গতি, যারা মোবাইল ব্যবহার ছাড়া হাঁটে তাদের গতির অর্ধেক। এছাড়া লম্বা পা ফেলে হাঁটার স্টেপ এক তৃতীয়াংশের চেয়ে ছোট হয়।
গবেষণার প্রধান লেখক ড. ম্যাথিউ টিমিস বলেন, “স্মার্টফোন ইউজাররা রাস্তায় খুব বয়স্ক লোকের মতো হাঁটাচলা করছে, ছোট পদক্ষেপের সঙ্গে ধীরগতি এবং সতর্কতা অবলম্বন করে তাদের চলতে হয়। কোনো বিপত্তিতে পড়লে হাঁটার গতি আরো ধীর গতির হয়। ”
গবেষকরা আইপি ট্র্যাকার এবং মোশন বিশ্লেষণ সেন্সরের মাধ্যমে বেশ কিছু মানুষের হাঁটাচলায় দৃষ্টি রেখেছিল ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির। যেমন হাঁটার সময় মেসেজ পড়া, লেখা, ফোনে কলা বলা এবং ফোন ব্যবহার ছাড়া। দেখা গেছে, ম্যাসেজ পড়ার তুলনায় লেখার ক্ষেত্রে দৃষ্টি ৪৬ শতাংশ বেশি নিচে এবং ৪৫ শতাংশ বেশি সময় থাকছে। এর ফলে যারা ফোন ব্যবহার ছাড়া হাঁটাচলা করে তাদের তুলনায় ১১৮ শতাংশ ধীর গতিতে হাঁটছে এবং ৩৪ শতাংশ বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে মেসেজ পড়ার সময় হাঁটা প্রায় এক তৃতীয়াংশ ধীরগতি এবং কথা বলার সময় হাঁটা ১৯ শতাংশ ধীরগতির হয়ে থাকে।
স্মার্টফোন মানুষকে একটি সরলরেখায় হাঁটতে বাধা দেয়, যা তাদেরকে রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট সহ বিভিন্ন কিছু সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ায়। আর এ সতর্কতাও তাদের হাঁটা ধীর গতির করে তোলে। তারপরও স্মার্টফোন হাতে নিয়ে যারা হাঁটেন, তারা অনেক সময় আশপাশের কিছুই খেয়াল করেন না। রাস্তায় এভাবে হাঁটতে গেলে অনেক সময়ই ঘটে যেতে পারে যে কোনো দুর্ঘটনা।