টসটসে রসাল। আর মিষ্টি। দেখতে যতটা আকর্ষণীয়। খেতে তার চেয়ে মজাদার। বলছি, পার্বত্যাঞ্চলে উৎপাদিত সাজেক ও খাসিয়া জাতের কমলার কথা। শুধু নামেও নয়, গুণগত মানেও জায়গা করে নিয়েছে কৃষকদের মনে। তাই তো বছরের সাথে পাল্লা দিয়ে আবাদ হচ্ছে এ সাজেক ও খাসিয়া জাতের কমলা। ফলন যেমন বাম্পার। ঠিক একইভাবে লাভবান হচ্ছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। শুধু রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি কিংবা বান্দরবান নয়। এ কমলা অর্থনৈতিকভাবে রপ্তানি হচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের প্রায় সব জেলাতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে চলতি বছর কমলার ফলন হয়েছে প্রায় এক হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনও হয়েছে বাম্পার। পাহাড়ে উৎপাদিত শুধু পাহাড়ে নয়, জনপ্রিয়তার স্থান দখল করেছে সমতলে। তাই সমতলের চাষীরাও পাহাড়ের কমলার চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। রাঙামাটির জেলার সবচেয়ে বেশি কমলার উৎপাদন হয় বাঘাইছড়ি উপজেলায়। তবে পিছিয়ে নেই বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর ও সদর উপজেলাও। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে কৃষকরা গড়ে তুলেছে কমলার বাগান। জুম চাষের পাশপাশি কমলার বাগানও স্থান দখল করেছে পাহাড়ে। এক একটি পাহাড়ে ২০০ থেকে ৩০০ কমলার গাছ রয়েছে। দূর থেকে আকর্ষণ করছে এসব কমলার গাছ। তাই তো বাগানে ভিড় করছে স্থানীয়রা। কেই ছবি তুলতে। কেই বা ক্রয় করতে। কমলার বাগানে মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে বলছেন কৃষকরা। কিছু বাগানে এখনো পরিপক্ক হয়নি। আবার অনেক বাগানি এরই মধ্যে বাজারজাত করেছে
কমলার। এসব উৎপাদিত কমলায় বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। তাছাড়া দামও কম হওয়ায় চাহিদাও প্রচুর।বনরূপা বাজারে কথা হয় কমলা বিক্রেতা সুমন্ত চাকমার সাথে। তিনি বলেন, পাহাড়ে উৎপাদিক কমলার চাহিদা রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। তাই এখন কমলার ব্যবসা শুরু করেছি। মৌসুমী ফল হিসেবে কমলার কদর আছে। তাছাড়া ফরমালিন মুক্ত পাহাড়ের কমলা গুনগতভাবে মান ভালো। তাই ব্যবসায় লাভবান হচ্ছি।
চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবছর কমলার চাষ বেড়েছে। তাছাড়া ফলনও ভালো হয়েছে। পাহাড়ের মাটি কমলা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। মাটি উর্বর হওয়ায় পাহাড়ের কমলাগুলো মিষ্টি ও রসালো হয়ে থাকে। তবে গান্ধী পোকার আক্রমণের কারণে কমলা তাড়াতাড়ি গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে। এজন্য কমলা গাছের পরিচর্যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য সার ও ওষুধ প্রয়োগের কলাকৌশল চাষীদের শিখিয়ে দিচ্ছে মাঠ কর্মীরা।