২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামলো রোববার (১৯ জানুয়ারি)। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগান নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব শেষ হবে সেরা সিনেমা নির্বাচন ও পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে।
রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেনস ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেনস ফিল্ম সেশনে বাংলাদেশসহ ৭৫টি দেশের মোট ২০৩টি পূর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার ছয়টি ভেন্যুতে উৎসব চলাকালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার, সমালোচক, সাংবাদিক, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তাসহ দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা অংশ নিয়েছেন। দর্শকরা বিনামূল্যে দেশি-বিদেশি এসব সিনেমা উপভোগ করেন।
রোববার সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা সিনেমার নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মঞ্চে তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বেশ কিছু ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের কথা জানান। পার্মানেন্ট ভেন্যু, নির্দিষ্ট বাজেট এবং বছরব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা এসব নিয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি আরও আশা করেন, ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে।
এরমধ্যে চিলড্রেন ফিল্ম সেকশনের বাদল রহমান অ্যাওয়ার্ডটি পেয়েছেন মিখাইল লুকাসেভিস্কি পরিচালিত রাশিয়ান সিনেমা ‘হয়্যার দ্য হোয়াইট ক্রেন্স ড্যান্স’।
স্পেশাল অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে জসেলিতো আলটারেজোস নির্মিত ফিলিপাইনস-এর সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব অনার’। বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত ভারতীয় সিনেমা ‘পদাতিক’। উইম্যান ফিল্মমেকার সেকশনে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ডটি পেয়েছে ক্লাভদিয়া করশুনোভা পরিচালিত ‘মলডোভা’ এবং রাশিয়ার যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘নট জাস্ট অ্যানি ডে’।
একই সেকশনের বেস্ট শর্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মারিয়া ববেভা নির্মিত বুলগেরিয়ার সিনেমা ‘স্কারলেট’। বেস্ট ফিচার ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সিনেমাটি ছিলো সারাহ মাল্লেগোল নির্মিত ফ্রান্সের সিনেমা ‘কুম্ভা’। বেস্ট ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সিনেমা ‘আওয়ার ওউন স্যাডো’, পরিচালক অগাস্টিনা জেভিয়ের। এটি আর্জেন্টিনা ও জার্মানির যৌথ প্রযোজিত সিনেমা।
বাংলাদেশ প্যানোরামার ট্যালেন্ট সেকশনে ৩টি সিনেমা পুরস্কৃত হয়; সেকেন্ড রানারআপ সিনেমাটি মোবারক হোসাইন নির্মিত ‘পৈত্রিক ভিটা’। ফার্স্ট রানারআপ সিনেমাটি আসিফ হামিদ পরিচালিত ‘ফুলেরা পোশাক পরে না’ এবং ফিফ্রেসি জুরি কর্তৃক প্রদত্ত বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি পায় মনন মুনতাকা নির্মিত ‘আ লেজি নুন’।
এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন সেকশনের বেস্ট স্ক্রিপ্টরাইটার অ্যাওয়ার্ডটি পায় তাকাতো নিশি ও নরিকো ইউয়াসা, তাদের সিনেমা ‘পারফর্মিং কাউরুস ফিউনারেল’-এর জন্য। এটি একটি জাপানিজ সিনেমা।
উক্ত সেকশনের বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডটি পায় সিনেমাটোগ্রাফার দিলসাত ক্যানান। সিনেমাটির নাম ‘হোয়েন দ্য ওয়ালনাট লিভস টার্ন ইয়োলো’। এটি একটি টার্কিস সিনেমা।
উক্ত বিভাগে মাহমুদ কালারি বেস্ট ডিরেক্টর হিসেবে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পান ‘সামার টাইম’ নির্মাণের জন্য। এছাড়া চীনা চলচ্চিত্র পরিচালক হাউফেং জু ও জুনফেং জু বেস্ট ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ডটি পান তাদের সিনেমা ‘১০০ ইয়র্ডস’-এর জন্য।
এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন সেকশনের বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি জিতে নেয় শকির খলিকোভ পরিচালিত উজবেকিস্তানি সিনেমা ‘সানডে’।