নিউজ ডেস্ক:
সুপারি ছাড়া পান খাওয়াই অচল। সুপারি আমাদের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কাঁচা কিংবা শুকনা, পানপাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়। পানের খিলিতে সাধারণত চুন, পানপাতা, এলাচি বা দারচিনির মতো মশলা এবং তামাকের সাথে মিশিয়ে এই খিলি তৈরি করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে এই সুপারি প্রায় ৬ কাপ কফির সমান কার্যকর। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ এই সুপারি খান। কোথাও কোথাও আবার এই সুপারিকে ভালোবাসার প্রতীক এবং বদহজম ও বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার প্রতিকার হিসেবে দেখা হয়।
আমরা অনেকেই জানি না এই সুপারিই প্রতিবছর হাজার-হাজার মানুষের মৃত্যুরও কারণ হচ্ছে। এর কার্যক্ষমতা এতটাই বেশি যে নিকোটিন, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইনের পাশাপাশি একেও মতিবিভ্রমকারী মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আমাদের দেশে সাধারনত কর্মক্ষম নারী ও পুরুষদের মাঝেই সুপারি খাওয়ার প্রবণতা বেশি। তবে কাজের ক্ষেত্রে যেমন, গাড়ি চালানো, মাছ ধরা কিংবা নির্মাণকাজের মতো কর্মকাণ্ডে দীর্ঘসময় জেগে থাকার জন্য পানের সাথে তারা সুপারি চিবান। তবে মাত্রাতিরিক্ত সুপারি খাওয়া ফলে অনেকের মুখে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এশিয়ার যে কয়টি এলাকায় সুপারি খুব বেশি জনপ্রিয় তার মধ্যে একটি তাইওয়ান। সেখানে সুপারিকে বলা হয় ‘তাইওয়ানের চুইংগাম’।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মুখের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হান লিয়াং-জুন বলেন, ‘অর্ধেক মানুষ এখনো জানেই না যে সুপারি মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ।’ আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে এলাচ এবং দারচিনি ছাড়া বাকি সব উপাদানকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
চুনকে বিশেষ একটি সমস্যা হিসেবে দেখা হয়, কারণ এটি ব্যবহারের ফলে মুখের ভেতর ছোট-ছোট অনেক ক্ষত তৈরি হতে পারে। ক্যানসার সৃষ্টিকারী অনেক উপাদান এসব ক্ষতের মাধ্যমে চামড়ার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
সময় থাকতেই সুপারি এবং চুনের মিশ্রণকে না করে দেওয়া উচিত।