চুয়াডাঙ্গায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রাটি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও শহীদ মিনার চত্বর হয়ে আবারও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর শোভাযাত্রায় আগত সকল শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড তাই জাতিকে শিক্ষিত ও সচেতন করে গড়ে তুলতে হলে সবার আগে প্রয়োজন আদর্শবান, জ্ঞানী ও ধৈর্যশীল শিক্ষক হওয়া। নিজেদের মেধা ও মননের সংমিশ্রণে শিক্ষার্থী বান্ধব হয়ে উঠতে হবে। তাহলেই নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) শারমিন আক্তার ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সী আবু সাঈফ। এছাড়া শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের অধ্যক্ষ এমএ রাশেদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল আরা চৌধুরী, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর হোসেন ও রিজিয়া খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান সাবিনা কুল। এছাড়া বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কথা বলেন, চুয়াডাঙ্গা ভিক্টরিয়া জুবলী উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থী খলিফা রওনক হাফিজ ফাহিম, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা জাহান সাবা ও ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের হাসিনা হুসাইন অহনা। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মীর মোহাম্মদ জান্নাত আলী।
সভায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বারবার উঠে আসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের দৌরাত্ব থেকে প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলে শিক্ষকরা তাদের কাজটি নির্বিঘ্নভাবে করতে পারবে। একই সাথে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে বেসরকারি (এমপিও ভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা) শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণের জোর দাবি তোলেন শিক্ষকরা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেলা শিক্ষা অফিসের ট্রেনিং সমন্বয়কারী এস এম হাবিবুর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেন, আমাদের সকলের উচিত ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে আরও গভীর করা এবং একটি ইতিবাচক শিক্ষামূলক পরিবেশ গড়ে তোলা। এই পারস্পরিক সম্মান শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হবে। এই বিশ্ব শিক্ষক দিবসে, আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি সম্মানজনক ও সহায়ক শিক্ষামূলক পরিবেশ গড়ে তুলি, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই মর্যাদার সাথে বাঁচতে ও শিখতে পারে।