অপহৃত ওয়াজেল উদ্ধার : দুই অপহরণকারী আটক
নিউজ ডেস্ক: নিখোঁজের একদিন পর মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রাম থেকে ওয়াজেল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে ওই গ্রামের আলোচিত সাথি আক্তার শেফালীর (২৬) বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ব্যবসায়ী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার ধর্মদহ গ্রামের মৃত মোজেল হকের ছেলে।
মুজিবনগর থানার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, গত ৩ মাস আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা চেকপোস্টে ব্যবসায়ী ওয়াজেলের সাথে পরিচয় হয় সাথি আক্তার শেফালীর। সেখানে মুঠোফোনের নম্বর আদান প্রদান হয়। পরে মুঠো ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই ব্যবসায়ী। গতকাল দুপুরে তার ফোন পেয়ে ওয়াজেল হোসেন বাগোয়ান গ্রামে কবরস্থান পাড়ার সাথির বাড়িতে দেখা করতে যায় সাথির সাথে। দুপুরে খাওয়ার পর ওয়াজেলকে একগ্লাস পানি খেতে দেয়া হয়। পানি খাওয়ার পর ধিরে ধিরে অচেতন হয়ে পড়তে থাকলে এসময় শেফালি ও তার সহযোগীরা তার হাতপা দড়ি দিয়ে বেধে শোবার ঘরে নিয়ে যেয়ে হাতে ও মাজায় একাধিক ইনজেকশন পুশকরে এ সময় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরবর্তিতে জ্ঞান ফিরে আসলে শেফালি ও তার সহযোগীরা ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বাড়িতে স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে চাঁদার টাকা পাঠাতে বলে। টাকা না দিলে অথবা পুলিশকে খবর দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। বাড়িতে ফোন করার জন্য তার উপর শেফালি ও তার সহযোগীরা অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
গতকাল দুপুরে জ্ঞান ফিরে পেয়ে ওয়াজেল চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ওয়াজেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্নও রয়েছে। এ সময় আটক করা হয় সাথি আক্তার শেফালী (২৬) এবং তার ভাই মিলনকে (৩০)। আটক দুইজনসহ ৫ জনের নামে ওয়াজেল হোসেন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় অপহরন ও চাঁদাবাজি মামলার করেছে বলে মুজিবনগর থানার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান। তিনি আরো জানান, এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে এবং আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাগোয়ান গ্রামের কোমরউদ্দীন সেলিম জানান, ওয়াজেলকে শেফালী ও তার সহযোগীরা হাতপা বেধে মুখেটিপে মেরে ঘরের ভিতর আটকিয়ে রেখেছিল পরে সে কোন রকমে ঘরের বাহিরে চলে আসে। পুনরায় শেফালী ও তার সহযোগীরা তাকে ঘরের ভিতর নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় লোকের চোখে পড়ে যায়। তখন লোকজন জড় হয়ে তাকে উদ্ধার করার সময় শেফালী ও তার সহযোগীরা পালানোর চেষ্টা করলে লোকজন শেফালী ও তার ভাইকে মাঠের ভিতর থেকে আটিক করে।
তিনি আরো জানান, এই শেফালী একজন দূধর্ষ প্রকৃতির মহিলা। আগে সে মুজিবনগর থানার প্রাক্তন ওসি রবিউল ইসলামকে কৌশলে ব্লাকম্যাইল করে তার অনেক বড় ক্ষতি করে। শেফালী এ পর্যন্ত ৬ থেকে ৭টি বিয়ে করেছে এবং কৌশলে তাদের টাকা পয়সা গহনাগাটি আত্মসাত করেছে তার অত্যাচারে বাগোয়ান গ্রামবাসি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল ভয়ে। তার আটকের খবরে স্বস্তির নি:স্বাস ফেলেছে গ্রামবাসি।