যানজটে স্থবির ঢাকার জট কমাতে রাজধানীর ২২টি মোড়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ প্রযুক্তি তৈরি করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
বুধবার সকালে বুয়েটে অনুষ্ঠিত ‘ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন। শিক্ষা ভবনসংলগ্ন মোড় থেকে ফার্মগেট-মহাখালী হয়ে উত্তরার আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে এ বাতি স্থাপন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার যানজট পরিস্থিতির উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বুয়েটের দুজন পরিবহন–বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন ও অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন) যমুনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা ঢাকার যানজট নিরসনে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছিলেন।
অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অতীতে ইউরোপ কিংবা অন্যান্য দেশের উন্নত প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব প্রযুক্তির জটিলতার কারণে কোনো পদ্ধতিই সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়নি। আর এটা হয়েছে আমাদের দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা, সড়ক ব্যবহারকারী—কোনোটাই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে মিল না থাকায়।’
তিনি বলেন, খুবই উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো সহায়ক বা বিকল্প (ব্যাকআপ সাপোর্ট) ব্যবস্থা থাকে না। অথচ ট্রাফিক সিগন্যাল ২৪ ঘণ্টাই প্রয়োজন হয়। তাই এক ঘণ্টার জন্যও ওই ব্যবস্থা ব্যাহত হলে পুরো ব্যবস্থাপনাই অকার্যকর হয়ে যায়। এ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাকআপ সাপোর্ট রাখতেই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই সিগন্যাল বাতিগুলো শিক্ষা ভবন মোড়, কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মিন্টো রোডের মোড়ে বসবে। পরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর হয়ে আবদুল্লাহপুর মোড় পর্যন্ত এসব ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানো হবে।