নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ডে নির্বাচন বিষয়ে চলতি সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ ইসি সচিবালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব ওয়ার্ডে নির্বাচনের আয়োজন করার অনুরোধের প্রেক্ষিতে কমিশন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সোমবার বাসসকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠি পাওয়ার পর কমিশন সচিবালয় ভোট আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কাজ হিসেবে ভোটার এলাকা নির্ধারণ, ভোটার তলিকার সিডি প্রস্তুত কার্যক্রম শেষ করেছে। এখন এ দুই সিটিতে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য কমিশনের অনুমোদন চাওয়া হবে। কমিশনের অনুমোদন পাওয়ার পর তফসিল ঘোষণাসহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।
সচিব বলেন, চলতি সপ্তাহে কমিশন বৈঠকে বিষয়টি তোলা হবে এবং কমিশন বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতামত দেবেন। সে অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুজনিত কারণে শূন্য ঘোষিত মেয়র পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টিও একই বৈঠকে মতামতের জন্য উপস্থাপন করা হবে। কমিশন চাইলে মেয়র নির্বাচনের সাথেও কাউন্সিলর নির্বাচন করতে পারে। এখন বিষয়টি পুরোপুরি কমিশনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
নবগঠিত ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচনের অনুরোধ জানিয়ে ইসিতে পাঠানো স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৮টি করে ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে সম্প্রসারিত অংশের ওয়ার্ড গঠনের প্রজ্ঞাপণে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং ও এসআরও নম্বর নেয়ার পর প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে দুই সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসন গঠন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ওয়ার্ডগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত।
চিঠিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে নবগঠিত ওয়ার্ডসমূহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন এবং দুই সিটিতে ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সংরক্ষিত ও সাধারণ মিলিয়ে ৪৮টি ওয়ার্ডে নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হবে।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে একই দলের প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন মেয়র নির্বাচিত হন। ওই সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৩৬টি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৫৭টি ওয়ার্ড ছিল। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ এ দুই সিটি কর্পোরেশনের পাশ্ববর্তী ৮টি করে মোট ১৬টি ইউনিয়ন ভেঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের এলাকাভুক্ত করে গত ২৬ জুলাই গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে নতুন করে ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়। নবগঠিত এলাকা নিয়ে এ সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৪টিতে। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে হয় ১৮টি।
একইভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়ে ৭৫টিতে দাঁড়ায়। সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ১৯ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫টিতে। (বাসস)