জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ
২৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮ টা। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তান আরাফাত বাড়ির উঠান ঘেসে প্রাচীরের পাশে দাড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তখনই প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ওই রাতেই সে মারা যায়। শোকে এখনও মর্মাহত পরিবারের সদস্যরা। সে কুষ্টিয়া রবিন্দ্রমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে ইংরেজি বিভাগে অধ্যায়নরত ছিল। আরাফাত ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাহাঙ্গির আলমের একমাত্র ছেলে। পরিবারটি আশায় বুক বেধেছিলেন একমাত্র ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শিখিয়ে দেশের সেবাই নিয়োজিত করবে তাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে আশা পুরণ হলো না তাদের। উল্লেখ্য, প্রতিবেশি উজ্জল জোয়ার্দ্দার, রাজ্জাক জোয়ার্দ্দার ও গোলাম জোয়ার্দ্দারসহ প্রতিপক্ষের সাথে বাড়ির সিমানা প্রাচীর নিয়ে বাকবিতন্ডের এক পর্যায়ে তারা আরাফাতকে পিটিয়ে হত্যা করে চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল। আরাফাতের মা আসমা আলম জানান, ছেলে হত্যার পর আমার কোন কথা স্বরণ থাকে না। আরাফাত আমার বলতো আম্মু আমি লেখাপড়া শিখে তোমাকে বিদেশে নিয়ে যাব। আমার মত কোন সেনা সদস্যের স্ত্রীর যেন বুক খালি না হয় একথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ছেলে হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন। আরাফাতের বোন জেবুন্নাহার জুই বলেন, আরাফাত বাবা মায়ের স্নেহের অনুগত সন্তান ছিল। এলাকার সবাই তাকে ভাল জানতো। আমার ভাই হত্যার সঠিক বিচার চাই। আরাফাতের পিতা প্রাক্তন সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ছেলে হত্যার পর পুলিশ বেশিরভাগ আসামীদের গ্রেফতার করেছে। তারা অনেকে জামিন নিয়েছে। জামিনে এসে আসামীরা মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তা ও হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি তদন্ত মহসিন হোসেন বলেন, আরাফাত হত্যা মামলার আসামী একজন বাদে সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকেও গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামীরা মামলার বাদী ও তার পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।