নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের টাকা আমরা ফেরত এনেছি। এটা নিয়ে (১ হাজার ২ শ’ কোটি টাকা পাচার) তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। জনগণের সম্পদ যারা লুটে নিয়েছে, নিশ্চয় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিশ্চয় আমরা ফেরত আনার পদক্ষেপ নেব। ইতিমধ্যে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। তদন্ত চলার স্বার্থে হয়তো সব আমি বলতে পারলাম না। গতকাল জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এরপর ফখরুল ইমাম বলেন, গ্লোবাল ইন্টিলেজেন্ট নেটওয়ার্ক’র (জিআইএন) প্রতিবেদন অনুযায়ী- শুধু দুবাই নয়, অত্যন্ত পক্ষে ১২টি দেশে জিয়া পরিবারের সম্পদ আছে। যার প্রাক্কলিত মূল্য ১ হাজার দুই’শ কোটি টাকা। সৌদি আরবে আহমদ আল আসাদের নামে আল আরাবা শপিং মলটির মালিকানা হল বেগম জিয়া। কাতারে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন ইকরা। এটির মালিকও বাংলাদেশী এবং এটার মালিকও উনি এবং আরফাত রহমানের নামে এই পুরা মালিকানা দেখা যায়। তাছাড়া তুহিন উনার ভাস্তে। তার নামে তিনটি বাড়ি আছে কানাডাতে। এছাড়া সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ ১৩ হাজার শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরের হোটেল মেরেনডি’র। ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের নামে লন্ডনে ষ্ট্যান্ডফোর্ড ও অলগেটি দুটি অ্যার্পাটমেন্ট রয়েছে। ব্যারিষ্টার মওদুদের নামেও অ্যাপার্টমেন্ট আছে। মির্জা আর্বাসের স্ত্রীর নামে দুবাইতে আছে বিলাস বহুল অ্যাপার্টমেন্ট। সিঙ্গাপুরে মির্জা আব্বাস ও তার সন্তানদের নামে কিনেছেন দুটি অ্যাপর্টমেন্ট। বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানের নামে সিঙ্গাপুরে রয়েছে বিলাস বহুল অ্যাপার্টন্টমেন্ট।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তথ্যগুলো যখন বের হয়েছে, তখন নিশ্চয় আমাদের কাছে আছে এবং এটা নিয়ে তদন্ত চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এই তদন্তের মাধ্যমে এ তথ্য যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, একথা তো সকলেই জানেন, আসলে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর মানুষ হত্যা করে, খুন করে। পরবর্তীতে আমরা ক্ষমতায় আসার পর আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা থেকে শুরু করে একদিকে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদের সৃষ্টি করেন। অপরদিকে ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতি করা, অর্থ পাচার করা এধরনের বহু অভিযোগ তো জনগণ সব সময় করেছে এবং এটা সকলেই জানে। এজন্য খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের টাকা ফেরত আমরা এনেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পাচার করা টাকা ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে আমাদের সরকারের আমলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাননীয় স্পিকার আমি বিষয়টি সংসদে তোলার জন্য সংসদ সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ আমরা যদি তুলে ধরি বা সরকার থেকে তুলে ধরলেই বাংলাদেশে বহু লোক আছে মায়া কান্না কানবে আর বলবে আমরা নাকি হিংসাত্মক হয়ে পড়ি। যেহেতু এটা অপপোজিশন থেকে আসছে মানুষ এটা উপলব্ধি করতে পারবে জনগণের সম্পদ কীভবে লুট করেছে। এজন্য বাংলাদেশ পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। কিন্তু দেশের উন্নতি করতে পারেনি। বরং আর্থ সামাজিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল বিএনপি জামাত আমলে।
প্রশ্ন করার সময় ফখরুল ইমাম বলেন, জিআইএন সম্প্রতি রির্পোর্ট অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া থেকে আরম্ভ করে তার পরিবারের সদস্য বিদেশে যে টাকা পাচার করেছে তার একটি তালিকা আছে। সেই তালিকার বিষয়টি উনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি জানেন, তবে উত্তর দিবেন। আর না জানলে আমি দুই এক লাইন এখানে পড়ে শোনাতে থাকি। এসময় আওয়ামী লীগের সদস্যরা পড়ে শোনানোর জন্য সমস্বরে বলতে থাকেন।