নিউজ ডেস্ক:
অপরাধ ধরা ও দমনে পুলিশ উচ্চ প্রযুক্তির পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকেন। তাই বলে আপনি বসে থাকলে হবে না। আপনাকে আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
কিছু কৌশল খাটিয়ে মন্দ লোক বা অপরাধীদের বোকা বানানো যায়। নিজ শহর ও বাইরের শহরে ভ্রমণকালে নিজেকে অক্ষত ও নিরাপদ রাখতে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।
* অপরিচিত ব্যক্তিদের সম্পর্কে সতর্ক থাকুন : অপরিচিত ব্যক্তিদের সম্পর্কে সতর্কতা শুধু শিশুদের জন্য নয়, বড়দের জন্যও প্রযোজ্য। আপনি হয়তো বাচ্চাদের বলেন যে অপরিচিত ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তর না দিতে, তাদের কাছ থেকে তৎক্ষণাৎ দূরে সরে যেতে, তীব্র চিৎকার করতে এবং বিশ্বস্ত কাউকে জানাতে। ভ্রমণ বিষয়ক সাইট জার্নি ওমেন ডটকমের সম্পাদক ইভলিন হ্যানন বলেন, অপরিচিত কেউ যদি আপনার কাছ থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে বসে তাহলে কৌশলে ‘না’ বলে চলে যান। তিনি আরো বলেন, আপনি যখন টাকা দেওয়ার জন্য ওয়ালেট বের করবেন তখন সম্ভাব্য চোরকে জানিয়ে দিচ্ছেন কোথায় নগদ টাকা রাখা হয়। আমি প্রায় সময় না বুঝার ভান করি এবং না থেমে চলে যাই।
* মাথা ঠান্ডা রাখুন : অ্যাডভেঞ্চার কন্যা নামে খ্যাত ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ স্টিফানি মাইকেলস বলেন, যদি দোকানের সহ ক্রেতা, বিমানযাত্রী, এমনকি পথচারী কটুক্তি করলেও অমায়িক থাকুন। তিনি আরো বলেন, একটি সাধারণ ধন্যবাদ ও ভুল স্বীকার বিস্ময়কর কাজ করে এবং যাত্রীদের বা অন্যদের সঙ্গে দীর্ঘপথ যেতে সাহায্য করে।
* সহজে চোখে পড়ে এমন পোশাক নয় : পাবলিক প্লেসের জন্য যথাসম্ভব সহজে দৃষ্টি আকর্ষণ হয় না এমন পোশাক পরিধান করুন। নারীদের প্রতি মাইকেলসের পরামর্শ হল, একাকী ভ্রমণের আগে তারা যেন সব অলংকার ঘরে রেখে দেন। তিনি বলেন, উজ্জ্বল বর্ণের সাজসজ্জা যা আপনাকে সহজে লক্ষণীয় করে তুলতে পারে তা পরিহার করুন এবং টি-শার্টে কোনো কিছু লিখবেন না। যত বেশি আপনি লক্ষণীয় হবেন তত বেশি শিকারে পরিণত হবার সম্ভাবনা থাকবে।
* অতিরিক্ত শেয়ার করবেন না : ফেলো শপার (দোকানের অন্য ক্রেতা), যাত্রী এবং অন্যদের সঙ্গে আলাপ করা ভালো কিন্তু আলাপ করতে গিয়ে নিজের সম্পর্কে যেন জানিয়ে না দেন। নিজেকে ‘রহস্যাবৃত’ রাখতে হ্যানন পরামর্শ দেন। ক্যাজুয়্যাল কথাবার্তায় আগন্তুকের কাছে কোথায় থাকেন এবং কোথায় ভ্রমণ করছেন তা ফাঁস করে দেবেন না। ভ্রমণে অপরিচিত কেউ যদি জিজ্ঞেস করে আপনি কি করেন এবং তাকে যদি বিশ্বাসযোগ্য মনে না হয় তাহলে নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দিন। হ্যানন বলেন, নিজেকে নিরাপদ রাখতে আমি প্রায় সময় পুলিশ বলে পরিচয় দিই।
* ট্রেইল রাখুন বা জানিয়ে যান : ভ্রমণে সবাই ক্যাজুয়্যাল আলাপের জন্য নতুন বন্ধু বানায়। নিজ শহর বা শহরের বাইরে আপনাকে পাবলিক প্লেসে চলতে হবে। পরিবার বা বন্ধুদেরকে বলুন কোথায় যাচ্ছেন। একাকী ছুটি কাটাতে গেলে বা বাণিজ্যিক মিটিংয়ে গেলে হোটেল রুমে নোট রেখে যান। কখন রুম ছাড়ছেন, কোথায় যাচ্ছেন এবং কার সঙ্গে মিটিং হবে তার উল্লেখ নোটে থাকতে পারে। ভ্রমণে সমস্যা বা বিপদ হতে পারে। এজন্য ট্রেইল রাখলে বা কাউকে জানিয়ে গেলে তা আপনার কাজে আসতে পারে।
* পর্যটক যে তা বুঝতে দেবেন না : যখন আপনি ব্যাকপ্যাক বহনকারী লোকজনকে মানচিত্রে নজর বুলাতে দেখবেন তখন হয়তো ভাববেন তারা পর্যটক। নিশ্চিতভাবেই পর্যটকরা তাদের সঙ্গে থাকা জিনিসের জন্য কিছু প্রতারক ও অপরাধীর সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। চুরি প্রতিরোধে লক্ষ্যণীয় জিনিসের সুরাহা করুন। হোটেল রুমে ব্যাকপ্যাক রেখে আসুন এবং স্থানীয় শপিংমল থেকে শপিং ব্যাগ নিয়ে তাতে মানচিত্র ও ক্যামেরা রাখুন। হ্যানন বলেন, চোর বা ছিনতাইকারী শপিং ব্যাগের তুলনায় ব্যাকপ্যাক বা পার্স বেশি ছিনিয়ে নেয়।
* জিপিএস ও অন্যান্য দিক নির্দেশক : অপরিচিত এলাকা বা বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার আগে অগ্রিম ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। আপনার গন্তব্যের যে কোনো দিক অর্থাৎ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম সম্পর্কে ভালোমতো জেনে নিন। ইলেকট্রনিক ম্যাপ বা জিপিএস কাজ না দিলে আপনার অর্জিত জ্ঞান আপনাকে পথ হারাতে দেবে না। ব্যাকআপ হিসেবে কাগজের মানচিত্র রাখুন। ব্যস্ত সড়কে বা সড়কের কোণায় মানচিত্র দেখবেন না এবং নার্ভাস দৃষ্টিতে তাকাবেন না। কোনো রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে বা নিরাপদ জায়গায় গিয়ে মানচিত্রে চোখ বুলাতে পারেন।
* এটিএম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন : নির্জন স্থানে বা আশেপাশে সন্দেহজনক লোকজন থাকলে এটিএম ব্যবহার করা উচিত নয়। এটিএমে সিকিউরিটি ক্যামেরা আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন। ধূর্ত অপরাধীরা রেকর্ডমুক্ত স্পট বেছে নেয়। নগদ অর্থের বেশি বাণ্ডিল তুলবেন না।
তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট