নিউজ ডেস্ক:
মৃত্যুর পর লাশ পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে ঢোকানোর আগে নড়ে উঠল মৃতদেহ! তাউ একবার—দু’বার নয়, বেশ কয়েকবার। এমনকী মুখ থেকে বেরিয়ে এল টাটকা রক্ত। এমন ‘মরদেহ’ কী পোড়ানো যায়? অতঃপর শ্মশান থেকে ফের মৃতদেহ নিয়ে আত্মীয়রা ছুটলেন হাসপাতালে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেওড়াতলা শ্মশানে। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যুর ব্যাপারে সুনিশ্চিত হওয়ার পর ফের পঞ্চভূতেই বিলীন হয়েছে ওই দেহ।
ঘটনার সূত্রপাত কলকাতার চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। হুগলীর বাসিন্দা অরবিন্দ সরকার নামে এক ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয় মঙ্গলবার। তার বয়স ৪৮ বছর। তিন ঘণ্টার মাথায় হাসপাতাল ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেয়। বাড়ি ঘুরে মৃতদেহ শ্মশানে আসে, দাহকার্যের জন্য।
কিন্তু এ কী! মৃতদেহ যে নড়ছে। নাহ, চোখের ভুল নয়। আরে এবার যে মুখ থেকে রক্ত বেরতে শুরু করল। এমনই ‘ভুতুড়ে’ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন শ্মশানযাত্রীরা। অনেকেই ভৌতিক কাণ্ড ভেবে ভয় পেয়ে গেলেন। শেষে আত্মীয়রা শ্মশান থেকে ফের মৃতদেহ নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। বিকেল তিনটে নাগাদ ‘দেহ’ নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে এবার আর হাজরার চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল নয়। এবার টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালে।
ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার প্রথমে ‘ব্রট ডেথ কেস’ ভেবেছিলেন। কিন্তু ডাক্তারকে চমকে দিয়ে ‘রোগী’-র আত্মীয়ারা ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ বের করেন। সবটা দেখে ভিমরি খাওয়ার জোগাড় চিকিৎসকের। বাঙুর কতৃর্পক্ষ ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, হ্যাঁ চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া এক ‘রোগী’ এখানে এসেছিল। সঙ্গে ডেথ সার্টিফিকেটও ছিল। এখানকার চিকিৎসকরা দেহটি পরীক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
এই ঘটনা নিয়ে চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল কতৃর্পক্ষের কোনও বক্তব্য সেই অর্থে মেলেনি। সূত্রের খবর, আড়াইমাস ধরে ওই রোগী চিত্তরঞ্জনে ভর্তি ছিলেন। ঘটনার দিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, মৃত্যু ঘোষণার চার ঘণ্টা পর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা। অথচ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আড়াই-তিন ঘণ্টার মাথায় ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছে। তাতেই এই বিপত্তি!
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর অনেক সময় ‘রিগর মরটিস’—এর জন্য মৃতদেহ নড়ে উঠতে পারে, চোখের পলক পড়তে পারে। এমনকী নার্ভ সঙ্কুচিত হওয়ায়, টান ধরায় দেহটি বেঁকেও যেতে পারে। কিন্তু মুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসাটা একটু বিরল ঘটনা। কেউ আবার মনে করছেন, খাটিয়ায় তোলার সময় মৃতদেহে দড়ির বাধন দেওয়া হয়। ওই বাধনের চাপেই মুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসাটা অস্বাভাবিক নয়।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন