নিউজ ডেস্ক:
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলায় রয়েছে ওয়ালং। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সে এলাকায় কপ্টার, হালকা বিমান ওঠানামা করত।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, একেবারে চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে থাকা ওয়ালংয়ে ১৯৬২ সালে ভারতীয় বাহিনীর ‘১১ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড’ চীনের পিএলএ বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল। ভারতীয় বাহিনীর পরাজয়ের পর থেকেই ওই ওয়ালং বন্ধ হয়ে যায়।
ফের চালু হল ওয়ালংয়ের ‘অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড’ বা এএলজি। যার জেরে চীনের গা ঘেঁসে থাকা অরুণাচল প্রদেশের এই এএলজি বিমান বাহিনীর হাত আরও শক্ত হল বলেই মনে করছেন ভারতের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও বিমান বাহিনীর এই প্রসঙ্গে দাবি, সামরিক কোনও কারণ নয়, প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা স্থানীয় মানুষদের সাহায্যের জন্যই ওয়ালংয়ের গুরুত্ব বেশি।
যদিও বিমান বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, চিন সীমান্তে নজরদারি, প্রহরা ও সেনা তথা বিমান বাহিনীর শক্তি বাড়াতে এএলজিগুলি ফের সক্রিয় করে তোলার জন্য ২০১৩ সালে কাজ শুরু করে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয়। সেই মতো ওয়ালংয়ের পাশাপাশি, মেচুকা, জিরো, টুটিং, আলং ও বিজয়নগরের এএলজিগুলিও সক্রিয় করে তোলা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয়।
বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত সরকার ‘বোয়িং’ সংস্থা থেকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত আক্রমণকারী হেলিকপ্টার ‘অ্যাপাচে এএইচ ৬৪-ই’ এবং সাড়ে নয় টন ওজনবাহী হেলিকপ্টার ‘সিএইচ ৪৭-এফ চিনুক’ কিনতে চলেছে। আপাতত বিমানবাহিনীর জন্য ১৫টি চিনুক ও ২২টি অ্যাপাচে কেনা হবে। পরে সেনাবাহিনীর ‘অ্যাভিয়েশন কোরে’র জন্যও ৩৯টি অ্যাপাচি কেনার প্রস্তাব রয়েছে।
চিনুক হাতে এলে সীমান্তে সেনা, সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া ও সড়ক নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ভারি সামগ্রী এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধা হবে। অন্য দিকে অ্যাপাচিবাহিনী সীমান্ত প্রহরা ও হানাদারিতে ভারতের ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দিতে চলেছে। এই অবস্থায় চীন সীমান্তে এএলজির সংখ্যা যত বাড়বে ততই ভারতের সুবিধা।
ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রে জানা গেছে, চীন সীমান্তে যে কোনও অভিযান শুরু করায় ‘ওয়ালং এএলজি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি, দূর্গম গ্রামগুলিতে ত্রাণ বা রেশন পৌঁছে দেওয়া, পাহাড়ের ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা সেনাকর্মীদের জন্য রসদ পৌঁছে দেওয়া এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও ওয়ালং থেকেই হেলিকপ্টার পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।