নিউজ ডেস্ক:
পার্লামেন্ট হাউসের সামনে সবুজ ঘাসের মাঠ। নিরাপত্তার জন্য কর্তৃপক্ষ সেখানে বেড়া দিতে চায়। কিন্তু লোকে তা মানবে কেন? তাঁরা বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিলেন। সেটাও এক অভিনব কায়দায়। সেই অনুযায়ী হাজার কয়েক মানুষ সেই মাঠে গতকাল শনিবার সকালে সমবেত গড়াগড়ি দিয়েছেন।
এ ঘটনা অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার। সন্ত্রাস দমনের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকার পার্লামেন্ট ভবনে ২ দশমিক ৬ মিটারের বেড়া দিতে চাইছে। কিন্তু তাহলে তো ঘাসে ঢাকা প্রিয় মাঠটিতে লোকজনের অবাধ প্রবেশও বন্ধ হবে। সেটা রুখতেই লেস্টার ইয়াও নামের এক ভদ্রলোক গতকালের গড়াগড়ি বিক্ষোভ ডাকেন। ফেসবুকে প্রচারের ফলে লোকজন ব্যাপক সাড়া দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
ইয়াও বলেন, তাঁর মনে হয়েছে মানুষকে ওই ঘাসের মাঠে অবাধে ঘুরতে দেওয়া উচিত। সে কারণেই তিনি বন্ধুবান্ধব নিয়ে গড়াগড়ি দিয়ে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এই ডাকে যে এতটা সাড়া পাবেন, তা ভাবেননি। ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়ে ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘ক্যানবেরা শহরের বাসিন্দা বা পর্যটকদের কাছ থেকে প্রায়ই শুনি, তাঁরা ক্যানবেরার অসাধারণ সবুজ চত্বরে হেঁটে আনন্দ পান। কেউ কেউ সেখানে হাঁটু গেড়ে বসেন। কেউ শুয়ে থাকতে বা গড়াগড়ি দিতেও ভালোবাসেন।’
এই সহজ আনন্দের কাজটার মধ্য দিয়েই প্রতীকীভাবে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বিক্ষোভ করা যেতে পারে। আর তাহলে নাগরিকেরা পার্লামেন্ট ভবনের পাশে ঘুরে বেড়ানোর অধিকারটা বহাল রাখতে পারবেন। এই ভাবনা থেকেই ইয়াও বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রেরণা পেয়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ক্যানবেরার বাসিন্দা। তবে আগে তিনি ফিলিপাইনে থাকতেন।
সরকার অবশ্য ওই বিতর্কিত বেড়া নির্মাণের ব্যাপারে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করেনি। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। এই কাজ আগামী গ্রীষ্মেই শুরু হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল এই ব্যয়বহুল পরিকল্পনার পক্ষে আছেন। আইনপ্রণেতাদের একাংশ সম্প্রতি এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ন্যাশনাল পার্টির আইনপ্রণেতা অ্যান্ড্রু ব্রড বলেছেন, পার্লামেন্ট চত্বরে শিশুদের গড়াগড়ির সুযোগ রাখা উচিত। সন্ত্রাসীদের ভয়ে জীবনযাত্রার ধরন যেন নষ্ট না হয়।