শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি।। গত ২০ ফেব্রুয়ারী বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত গোগার শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ ক্যাডার জসিমের নামে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আনন্দ উচ্ছাসে ভাসছে শার্শা উপজেলার গোটা গোগা ইউনিয়ন বাসী। সদা ভীত সন্ত্রস্ত ইউনিয়ন বাসী গ্রামের কাগজকে সাধুবাদ জানিয়েছে। সেই সংগে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্ত ভোগীরা। ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসছে যুবলীগ ক্যাডার সন্ত্রাসী জসিমের শত শত অত্যাচার, নির্যাতন, নীপিড়ন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অজানা তথ্য। গোগা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ ¯^ঃপ্রনোদিত হয়ে সাংবাদিক টিমের কাছে দিচ্ছে গা শিউরে ওঠা তথ্য, আবার বিচারের নামে হাস্যরস সৃষ্টিকারী তথ্য। যদিও তা শুধু মগের মুল্লুকেই ঘটে থাকে। কালিয়ানী গ্রামের জনৈক সালাউদ্দীনের ছেলে স্থানীয় গোগা কালিয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তার সহপাঠি ঐ বিদ্যালয়ের একই শ্রেণীতে অধ্যায়নরত গোগা পূর্বপাড়া এলাকার জনৈক মাহবুরের মেয়েকে “আই লাভ ইউ” বলে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক অসম প্রেমের কাহিনী নিয়ে গত ২০ জানুয়ারী রাতে গোগা বাজারে জসিমের অফিসে (যেটি এলাকায় জসীমের আদালত নামে পরিচিত) বিচার বসে ছেলেটিকে আই লাভ ইউ বলার অপরাধে দোষী সাবস্থ্য করে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ¯^রূপ চাঁদা আদায় করে জসিম ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। বিচারের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক কৌতুহুল ও হাস্যরসের সৃষ্টি করে। তখন থেকে কথাটি প্রবাদ বচনের মত সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এবং বলতে থাকে সবাই সাবধান “আই লাভ ইউ” বললেই ১ লক্ষ টাকা জরিমানা। কালিয়ানী গ্রামের আপেল উদ্দীনের ছেলে যুবলীগ ক্যাডার এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জসিম গোগা ইউনিয়নটিকে মগের মুল্লুকে পরিণত করে তার নিজ¯^ বিচার ব্যবস্থা চালু করেছে। জসিমের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় কালিয়ানী গ্রামের সাবেক মেম্বর আওয়ামীলীগ নেতা আকবার আলী, জসিম ও তার বাহিনীর হাতে গুরুত্বর জখম হয়। পরে গোগা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা মোহাতার হোসেন জসিমের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হলে গোটা গোগা ইউনিয়ন বাসী সন্ত্রাসী জসিমের ভয়ে চুপসে যায়। ভয়ে আর কেও কোন প্রতিবাদ তো দুরের কথা টু-শব্দটি পর্যন্ত করে না। এই সুযোগে জসিম আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এলাকায় ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করে নিজ¯^ আইন ও বিচার ব্যবস্থা বহাল তবিয়তে চালাতে থাকে। যা আজও চলছে। চলতি মাসের ১২ ফেব্রæয়ারী সোমবার রাতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে কালিয়ানী গ্রামের মৃত এলাহী ব·ের ছেলে শাহিন সরদারকে পুলিশ দিয়ে তুলে জসিমের অফিসে আনে। পুলিশ বিষয়টি মিথ্যা জেনে শাহিনকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ছাড়েনি জসিম ও তার বাহিনী। জসিমের আদালতে বিষয়টি নিয়ে বিচার হয় শহিনের নামে সন্ত্রাসী মামলা হবে বলে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে। এই কাজে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে পুলিশের সোর্স নামধারী গোপালপুর গ্রামের মিল্টন। গোগা বাজারের গ্রাম্য এলোপ্যাথিক চিকিৎসক মৃত শাহাদৎ সরদারের ছেলে ডাঃ মজুন আলী ওরফে মজনু ডাক্তার এর কাছ থেকে ৪১ হাজার টাকা নগদ চাঁদা আদায় করে। মজনু ডাক্তারের অপরাধ সে একটি বউ তালাকের ঘটনায় উপস্থিত ছিল। বউ তালাকের ঘটনায় উপস্থিত ব্যাস জসিমের আদালতে দাও ৪১ হাজার টাকা। মিথ্যা তথ্যে আমলাই গ্রামে শাহাজামাল ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দিলেও শাহাজামালেরর মত শত শত ভুক্তভোগী আছে যারা জসিমের আদালত থেকে বাঁচতে জমা জমি বন্ধক রেখে দায়দেনা করে জসিমের চাঁদা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। একটি মিথ্যা অভিযোগও যদি জসিমের আদালতে কেউ বাদী হয়ে দাখিল করে তাহলে সেটি সত্য বলে স্বীকার না করা পর্যন্ত বিবাদীর উপর চলতে থাকে বিভৎস অত্যাচার, নির্যাতন। জসিমের আদালতে মিথ্যা কোন অভিযোগও বিবাদীরা বাধ্য হয়ে স্বীকার করে নেয় জসিমের বিভৎস, অত্যাচার, নির্যাতনের কারণে। জসিমের অত্যাচার, নির্যাতন, নীপিড়ন, হয়রানী, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের হাত থেকে স্বয়ং আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতারাও যখন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তখন সাধারণ মানুষের কি অবস্থা সেটা সহজেই অনুমেয়। জসিমের অত্যাচারের মুখে জিম্মি হয়ে পড়েছে শার্শার গোটা গোগা ইউনিয়নবাসী। অথচ এত কিছু ঘটার পর প্রশাসন নির্বিকার নিশ্চুপ হয়ে থাকে। জসিম ও তার বাহিনীর আয়ের উৎস গোগা চোরাচালানী ঘাট, অগ্রভূলাট চোরাচালানী ঘাট, গোগা বাজার, গোগা গরুর খাটাল, ভুলোট গরুর খাটাল, হন্ডির ব্যবসা। হাট, ঘাট, গরুর খাটাল, হন্ডির ব্যবসা ও জসিমের আদালতে প্রহসন মূলক বিচার শালিসের নামে চাঁদাবাজি করে সে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। এলাকাবাসী জানায় জসিম তার আয়ের একটি অংশ প্রশাসনকে দিয়ে থাকে। তাই তারা জসিম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো জসিমের কথামত কাজ করে থাকে। জসিমের ভয়ে জিম্মি এলাকাবাসী মুক্ত বিহঙ্গের মত অন্য এলাকার আর দশটি সাধারণ মানুষের মত পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাধীন জীবন যাপন করতে চাই। তাই তারা এব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। (চলবে)