নিউজ ডেস্ক:
গৃহকর্মী আদুরীকে (১১) নির্যাতন করে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে আসার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা হবে আজ দুপুরে।
মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। গত ৯ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এদিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।
আদুরীর মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছেন। সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার রিংকি বলেন, আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছি। এটা যেন একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। আজ আদুরী আদালতে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান ফাহমিদা আক্তার।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরীকে। উদ্ধারের সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন ছিলো। মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীর পোঁচানো, মাথায় কোপ, মুখে আগুনের ছ্যাঁকা।
প্রায় দেড় মাস আদুরীকে চিকিৎসা দেয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ। দেড় মাস পর যখন তাকে রিলিজ দেওয়া হয় তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারতো না। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ৭ নভেম্বর সে তার নিজ বাড়ি পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নে যায়।
এদিকে ওই ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা করা হয়। তবে পুলিশের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনিকে বাদ দেওয়া হয়। তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।
মামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বরই গ্রেপ্তার করা হয় নদীকে। সেই থেকে নদী কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন তার মা ইসরাত জাহান। গ্রেপ্তারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরীও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেয়।
২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের এসআই কুইন আক্তার। ২০১৪ সালের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।