স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দূর্বাকুন্ডু গ্রামে। স্বামীর কেনা জমিতে ঘর নির্মান করছিলেন বিধবা মিনারা বেগম। লিলটন পর্যন্ত পিলার উঠানোর পর তার উপর টিনের চাল তুলে দিলেন গ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। ওই জমিতে অংশ দাবি করে প্রভাবশালী হাবিবুর রহমান এই নির্মানাধীন ঘর দখল করে নিয়েছেন। আর বিধবা ওই নারী প্রশাসন সহ সকলের দরজায় প্রতিকার চেয়ে কড়া নাড়ছেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ করেছেন। বিধবা অভিযোগ করেন, বাজারের জায়গাটি মাত্র ৫ বছর আগেও জঙ্গল ছিল। ৫৬০ দাগের ৪৫ শতক জমিও জঙ্গল আর গর্ত ছিল। যেখানে কোনো চাষাবাদ হতো না। ওই এলাকার মেম্বর ছিলেন তাদেরই গ্রামের আলাল উদ্দিন। পর পর দুইবার তিনি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালের ২ আগষ্ট মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। দুর্বাকুন্ডু গ্রামের যে স্থানটিতে বাজার গড়ে উঠছে সেখানে ওই মেম্বার ১৮ শতক জমি কেনেন। স্বামীর মৃত্যুর পর যে জমিটা তার বিধবা স্ত্রী মিনারা খাতুনের দখলে রয়েছে। এলাকাবাসি আবু বক্কর জানান, মিনারা বেগম ওই জমিতে একটা ঘর তুলেছেন। কিন্তু পার্শ্ববর্তী চতুরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান টিনের একটি চাল উঠিয়ে সেটা দখল করে নিয়েছেন। যা খুবই দুঃখজনক। বিধবা মিনারা বেগম জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর মাত্র ১০ দিন পূর্বে চতুরপুর গ্রামের আব্দুল আলিম বিশ্বাসের নিকট থেকে সাবেক দাগ ৫৬০ ও বর্তমান দাগ ৪৪৬ এর ১৮ শতক জমি ক্রয় করেন। এই জমিতে তিনি বিভিন্ন গাছ লাগিয়েছিলেন। নানা সময় নানা ভাবে চাষাবাদ করতেন। স¤প্রতি সেখানে তিনি পাঁকা ঘর নির্মান শুরু করেন। প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয় করে এই ঘরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার হঠাৎ করে চতুরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান সেই ঘরের পিলারের উপর টিনের চাল বসিয়ে দিয়েছেন। এই জমি তার দাবি করে তিনি এভাবে তার ঘরটিও দখল করে নিয়েছেন। মিনারা খাতুন জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি কোটচাঁদপুর থানা পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কোনো সমাধানের ব্যবস্থা করেনি। দখলদারের টিনের চালও উচ্ছেদ করা হয়নি। এখন তিনি ওই জমিতে যেতে পারছেন না। এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান জানান, মেম্বার আলাল উদ্দিন ১৮ শতক জমি আব্দুল আলিমের নিটক থেকে ক্রয় করলেও প্রকৃতপক্ষে আব্দুল আলিম ৭ শতক জমির মালিক। সিএস রেকর্ডে আব্দুল আলিমের নামে বেশি রেকর্ড হয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা রেকর্ড সংশোধন করেছেন। এখন ৭ শতক জমির মালিক মিনারা বেগম। ঘর দখল সম্পর্কে তিনি জানান, মিনারা যখন প্রথম ঘর শুরু করেন তিনি বাঁধা দিয়েছিলেন। কথা না শোনায় এখন দখল নিয়েছেন। মিনারা যে ৭ শতক জমি পাবেন তা যে কোনো এক পাশ থেকে নিতে হবে, এভাবে জমির মাঝামাঝি ঘর করতে সে পারে না বলে জানান হাবিবুর রহমান। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সাহা জানান, বিষয়টি শোনার পর তিনি একজন কর্মকর্তা পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুইপক্ষকে নিয়ে একটা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জিনি জানান।