নিউজ ডেস্ক:
\ এক \
আল্লাহতায়ালার অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান একটি হলো সময়। মহাগ্রন্থ আল কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন স্থানে নিয়ামতটির যথার্থ মূল্যায়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কেননা, সময়ের যথাযথ মূল্যায়নও ব্যবস্থাপনা ছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব নয়। ইসলামী শরীআত এ কারণে সময় ব্যবস্থাপনাকে মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেছে। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে সময়, সময়ের গুরুত্ব, সময় ব্যবস্থাপনা, মানুষের উভয় জীবনে সফলতার জন্য সময় ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব ও পদ্ধতি আলোচনার উদ্দেশ্যে অত্র প্রবন্ধটি প্রণীত হয়েছে। প্রবন্ধটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বর্ণনা ও বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। আলোচ্য গবেষণাকর্ম থেকে প্রমাণিত হয়েছে, সমসাময়িক সময় ব্যবস্থাপনা পরিভাষাটির মূল কথা হয়েছে। আলোচ্য ইসলাম প্রদান করেছে। ইসলাম নির্দেশিত যৌক্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে সময় ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হলে মানুষের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত হতে পারে। মহান আল্লাহ তাঁর উত্তম সৃষ্টি মানুষকে অফুরন্ত ও অগণিত নিয়ামত দ্বারা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। তিনি এসব নিয়ামতের ব্যবহার ও উপভোগের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। এর ভিত্তিতেই মানুষকে এসব নিয়ামত ব্যবহার করতে হয় এবং পরকালে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
মহান আল্লাহ অফুরন্ত নিয়ামতরাজির মধ্যে সময় হচ্ছে অন্যতম। নিশ্চয়ই সময়, দিন, রাত্রির সমন্বিত রূপ। সময় শব্দটি তিন অক্ষরের ছোট শব্দ হলেও এর ব্যাপ্তিকাল অনেক বড়। সৌর বছরে ৩৬৫ দিন আর চন্দ্র বছরে ৩৫৪ দিন। ঘণ্টার হিসাবে ২৪ ঘণ্টা এবং মিনিটের হিসাবের দিক দিয়ে ১৪৪০ মিনিট। এ সময় হতে এক ঘণ্টা বা এক মিনিট চলে যাওয়া মানে প্রকৃত পক্ষে জীবনের একটা মূল্যবান অংশ কমে যাওয়া। এ কারণে সময়ের যথাযথ ব্যবহার একান্ত অপরিহার্য। সময়ের সমষ্টিই জীবন। মানুষ তার দুনিয়ার জীবন কীভাবে অতিবাহিত করেছে আখিরাতে সে হিসাব প্রদান করতে হবে। এ কারণে সময়ের সদ্ব্যব্যবহারের জন্য এর যথার্থ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। এ প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখেই জন্ম হয়েছে সময় ব্যবস্থাপনা পরিভাষার।
বর্তমানে উন্নয়ন চিন্তার ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন ধারণাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত। কেননা, সব ধরনের চিন্তার মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে মানবসম্পদ। তাকে কেন্দ্র করেই সব ধরনের উন্নয়ন চিন্তা পরিচালিত হয়। এ উন্নয়ন চিন্তার স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতার জন্য সময় ব্যবস্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত। ইসলাম মানুষের সার্বিক কল্যাণ, চিন্তা ও পরকালীন সুখ-সমৃদ্ধির বিষয় সামনে রেখে মানুষকে সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন, এর সদ্ব্যবহার ও ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনার নির্দেশ প্রদান করে। আরবিতে সময়ের প্রতিশব্দ ওয়াক্তুন। এর বহুবচন আওক্বাতুন। ইংরেজিতে সময়ের প্রতিশব্দ ঞরসব, ঢ়বৎরড়ফ, যড়ঁৎ। সময় বা কাল একটি পুরাতন পরিভাষা। তা দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন নির্দিষ্ট মেয়াদে নানা ঘটনার অতিক্রমকে বোঝানো হয়। এ কারণে এ সময় থেকে যা অতিক্রান্ত হয় তা আর কখনো ফিরে আসে না। সময় হচ্ছে এই সংক্ষিপ্ত দুনিয়াতে মানুষের প্রধান সম্পদ। এটা তার আয়ূষ্কালের সংক্ষিপ্ত রূপ এবং তার কাঁধে একটা বড় দায়িত্ব। যদি সে সময়ের দ্বারা উপকৃত হয়, তাহলে সে তার উত্তম প্রতিফল পেল। আর যদি সে তার কাঁধে সময় নামক অর্পিত বস্তুর আমানত ও দায়িত্ব পালনে খেয়ানত করে, তাহলে সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।