স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বি,সি,আই,সি’র বাফার সার গোডাউন থেকে একের পর এক ইউরিয়া সার গায়েবের ঘটনায় জেলা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে ৫৪৭ দশমিক ৪৯ মিট্রিক টন ইউরিয়া সার গায়েব হওয়ার পর নতুন করে আবার ২৮০ মেট্রিন টন সারের কোন হদিস মিলছে না। এ নিয়ে গত আট বছরে এ গোডাউন থেকে সর্বমোট ১০৪০ মেট্রিক টন সার গায়েব হলো। এদিকে নতুন করে সারগায়েবের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজেস্ট্রেট মো: আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের তদন্ত দল বুধবার গোডাউনে উপস্থিত হয়ে সার গণনা শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কম ওজনের ২২৭৮ মেট্রিক টন ব্যবহার অনুপযোগী জমাট বাধা সার রি-প্যাকিং করা হয়েছে। আর এ সময়ই ২৮০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের ঘাটতি ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: আসাদুজ্জামান বলেন, কি পরিমাণ সার ঘাটতি রয়েছে তা গণনা শেষে জানা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমরা নির্ভুলভাবে গণনা করছি। চার সদস্যের গণনা কমিটির সদস্য সচিব বিসিআইসি’র সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ এ গণনার কাজ শেষ করা হবে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৮ মে আবারো ৫৪৭ দশমিক ৪৯ মিট্রিক টন ইউরিয়া সার আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। সে সময়কার গোডাউন ইন চার্জ জালাল উদ্দিন, আবু সাইদ, আব্দুল লতিফ, হিসাব সহকারি (বর্তমান) জামির হোসেন, সহকারী সিকিউরিটি অফিসার বোরহান উদ্দিন এই সার লোপাটের সাথে জড়িত থাকলেও আজো তাদের বিরুদ্ধে বিসিআইসি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ। সেই রেশ কাটতে না কাটতে ২০১৭ সালে আবারো ২৮০ মেট্রিক টন সার গায়েবের খবর ফাঁস হয়ে পড়ে।
কালীগঞ্জ বাফার গুদামের ইনচার্জ মাসুদ বলেন, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় খাতা পত্রে গুদামটিতে ২২৭৮ মেট্রিক টন (৪৫ হাজার ৫ শত ৬১ বস্তা ) জমাট বাধা ব্যবহার অনুপযোগী ইউরিয়া সার মওজুত ছিল। ওই বছরের ফেব্রয়ারী মাস থেকে ব্যবহার অনুপোযোগী সার ক্রাশিং করার কাজ শুরু করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ৩৯,৫৬১ বস্তা জমাট বাধা সার ক্রাশিং করা হয়েছে। এ থেকে অনুমান ২৮০ মেট্রিকটন সারের ঘাটতি ধরা পড়েছে বলে মাসুদ রানা দাবি করেন। সেই হিসেবে লোপাট হওয়ায় সারের সরকারী ক্রয় মুল্য হবে ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে বি,আই,সির ডিলার সমিতির ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন ও সহ-সভাপতি অনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পাথরের মত শক্ত জমাট বাধা সার ক্রাশিং করা হচ্ছে। ক্রাশিং করার পর সারের গুনাগুন নষ্ট হয়ে পাউডারে পরণিত হচ্ছে। আর এই সার জোর করে ডিলারদের নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে করে কৃষক ও সার ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।