কামারখন্দে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১৫

0
21

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  পবিত্র ঈদুল-ফিতর উপলক্ষে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের বরাদ্দকৃত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দুই জন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
নিহতরা হলো, উপজেলার পাইকোশা গ্রামের দানেশের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স ২য় বিভাগের ছাত্র ফরিদুল ইসলাম (২২) ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়ার পথে রাস্তায় বুধবার বিকেলে ফরিদুলের মৃত্যু হয় অপরদিকে সংঘর্ষে আহত বাগবাড়ী গ্রামের জাহাঙ্গীরের ছেলে ঝাঐল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও শহিদুল বুলবুল কারিগড়ি কলেজের কৃষি বিভাগের অষ্টম সেমিষ্টারের ছাত্র শিপন (২২) বুধবার রাতে মারা যায়। বগুড়ার জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা শিপনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আহতরা হলো,  উভয় গ্রামের ঝাঐল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাজিদুল ইসলাম, বেলাল হোসেন , আনোয়ার হোসেন , তারা মিয়া , হাসান , মাসুদ, ইমরুল হাসান, আব্দুল মজিদ, আব্দুল রশিদ সহ অন্তত ১৫ জন।
আহতদের স্থানীয় ক্লিনিক ও সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল-ফিতর উপলক্ষে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের বরাদ্দকৃত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গত শনিবার কামারখন্দ উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের যুবলীগ নেতা বাবুর সঙ্গে পাইকোশা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মোহাম্মদ আলীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আলীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা বাবুসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
বুধবার সকালে আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে পাইকোশা বাজারে হামলা চালায়। এসময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা পাল্টা হামলা চালালে সংঘর্ষ বাঁধে। দফায় দফায় সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পাইকোশা বাজারে প্রায় ২০/২২ দোকান পাট ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা এতে দোকান মালিকদের প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান দোকান মালিকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এলাকায় এবং বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা শিপনের মৃত্যু হয়।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাসুদেব সিনহা সংঘর্ষে আহত ফরিদুল ইসলাম ও শিপনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। সন্দেহভাজন  ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা ও পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।