নিউজ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসারসহ নতুন করে ২৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলার মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭৯ জনে। কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে গতকাল বুধবার রাত ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিসে চুয়াডাঙ্গা থেকে গত ২৪ জুলাই, ২৫ জুলাই ও ২৬ জুলাই তারিখের সংগৃহীত তিন দিনের ৭১টি নমুনার ফলাফল এসেছে। এতে ২৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ ও বাকি ৪৭ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। গতকাল বুধবার রাত ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল করোনা শনাক্ত ২৪ জনের বয়স ৭ বছর থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে নবিছউদ্দীন (৬৮) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত নবিছউদ্দীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের উকত গ্রামের বাসিন্দা।
গতকালের ফলাফলে নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার পদের ১ জন, কোর্টপাড়ার ১ জন, বাগানপাড়ার ১ জন, গোরস্থান পাড়ার ১ জন, ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার ১ জন, সাদেক আলী মল্লিক পাড়ার ১ জন, দৌলাতদিয়াড়ের ১ জন, গোপালনগরের ১ জন, জ্বিনতলা মল্লিকপাড়ার ১ জন, ফেরিঘাট রোড়ের ১ জনসহ ১৫ জন। দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার ২ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলার বন্ডবিলের ১ জন, ভাঙবাড়িয়া গ্রামের ১ জন, বাবুপাড়ার ১ জন, কলেজপাড়ার ১ জন, কালিদাশপুর গ্রামের ১ জন, পাঁলিয়া গ্রামের ১ জন, পুরাতনপাড়ার ১ জনসহ ৭ জন।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলা থেকে গত ২৪ তারিখ করোনা পরীক্ষার জন্য ২৭টি নমুনা ও ২৫ তারিখ ১০৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ২৪ তারিখ সংগৃহীত ২৭টি নমুনার মধ্যে ১৮ জনের ও ২৫ তারিখ সংগৃহীত ১০৫টি নমুনার মধ্যে ২৯ জনেরসহ মোট ৪৭টি নমুনার রিপোর্ট গত মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়। গতকাল ২৪ তারিখের বাকি ৯টি, ২৫ তারিখের বাকি ৫৮টি ও ২৬ তারিখে সংগৃহীত নমুনার মধ্যে ৩টি নমুনাসহ গতকাল ৭১টি নমুনার ফলাফল এসেছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ৪০টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। সদর উপজেলা থেকে ৩১টি, আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে ৪টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৫টি নমুনাসহ সংগৃহীত ৪০টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন সদর উপজেলায় ২৭৩ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২৪ জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ১২৫ জন ও জীবননগর উপজেলায় ৫৬ জনসহ মোট ৫৭৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন সদর উপজেলায় ৯০ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৭৫ জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ৭৮ জন ও জীবননগর উপজেলায় ২৭ জনসহ মোট ২৭০ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। সদর উপজেলায় ৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩ জন ও দামুড়হুদা উপজেলায় ৩ জনসহ ১০ জন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির বলেন, চুয়াডাঙ্গায় নতুন ২৪ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে সদর উপজেলার ১৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৭ জন ও দামুড়হুদা উপজেলার দুজন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের বাড়ি-ঘর পরিদর্শন করে লকডাউনসহ বাড়ির অবস্থা বুঝে হোম আইসোলেশন অথবা প্রতিষ্ঠানিকব আইসোলেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে নবিছউদ্দীন নামের এক বৃদ্ধকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয় তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁর শরীরে করোনা উপসর্গ পরিলক্ষিত হওয়ায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালের ইয়োলো জোনে ভর্তি রাখেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। শামীম কবির বলেন, রাতেই তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং করোনা প্রটোকলে তাঁর দাফন কার্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলায় এখন পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৩ হাজার ৩৮৩ জন। প্রাপ্ত ফলাফল ৩ হাজার ৭১টি। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৭৯ জনের, করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ২ হাজার ৪৯২ জনের। সুস্থ ২৭০ জন ও মৃত্যু ১০ জন।