রেলওয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে এবারও ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট সবার ভয়ানক পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেছেন, আমি সবাইকে বলে দিয়েছি এবার যদি আমরা ব্যর্থ হই তাহলে কিন্তু আমাদের সবার ভয়ানক পরিণতি হবে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে রেল ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আরো বলেন, এটা কোন বানেভাসা সরকার না, এটা মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকার না, এটা কোন থানার ওসির সরকার না।
এটা আমাদের ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত সরকার।
পরিসংখ্যান দিয়ে কাউকে মূল্যায়ন করা হবে না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, রেলওয়ে একটি সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। এটাকে সেবা দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে।
টিকিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ কাউন্টারে গেলে টিকিট পায় না। কিন্তু আবার ট্রেনে উঠতে গেলে আলাদাভাবে টিকিট পাওয়া যায়। এটা আগে চললেও এখন চলতে পারে না। জানা গেছে রেলওয়ে কয়েকজন লোক আছে তারা ফোন নাম্বার দিয়ে এই কাজটি করে থাকে। সাধারণ মানুষ কাউন্টারে গিয়ে টিকিট পায় না। এখন বলে দিয়েছি এ বিষয়ে একটা টাস্ক ফোর্স গঠন করতে। ওই ফোন নাম্বার গুলো যেন ব্লক করে দেয়। ওরা যেন আর কখনো কোন টিকিট কিনতে না পারে। এটাও বলে দিয়েছি, যে আইডি ও মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকিট কাটা হয়েছে ও যিনি ট্রেনে ভ্রমণ করছেন তার সঙ্গে তার সঙ্গে মিলছে কিনা।
ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে আরও একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে জানিয়ে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, কয়টার ট্রেন কয়টায় যায় এটা বন্ধ করতে হবে। কিছু কারিগরি সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু এইটা দূর করতে হবে। রেলের জমি নিয়ে নয়-ছয় বন্ধ করতে হবে। রেলের জমি কার কার হাতে আছে সেটা দেখতে হবে। আশা করি এই সব বিষয়ে আমার কাছে পাঠানো হবে। এবং আমরা কন্সট্যান্ডলি এটা মনিটরিং করব।
আরও পড়ুন: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোনো প্রকল্প থাকবে না: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
রেলের দুর্নীতির বিষয়ে উপদেষ্টার অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে দুর্নীতি তো মাথা থেকে শুরু হয়। তারা পিয়ন-ড্রাইভারের মাধ্যমে টাকা নেয়। আমি বলেছি, আমাকে যদি কেউ টাকা দিতে চায়, তাহলে সরাসরি আমার অফিসে এসে সামনাসামনি দেবেন। আমি কারো মাধ্যমে টাকা নেবো না। আমি রেলের সচিবকে সঙ্গে রাখবো এবং টাকা নেয়ার রিসিপ্ট দেবো। যদি বাংলাদেশি টাকায় পেমেন্ট হয়, তাহলে বাংলাদেশি রিসিপ্ট, যদি ডলারে পেমেন্ট হয়, তাহলে ডলারের রিসিপ্ট দেবো। আশা করি ওনারা বুঝতে পারছেন। আমি কাস্টমসে চাকরি করেছি, হাজার হাজার কোটি টাকা লোন দিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগে সচিব হিসেবে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প করেছি। ওনাদের খোঁজ নিতে বলেছি, আমাকে কিভাবে টাকা দিতে হয় সেই পদ্ধতিটা জানতে বলেছি। সুতরাং, ওপর থেকে কোনো রকম দুর্নীতি হবে না। ওপর থেকে যদি দুর্নীতি না হয়, তাহলে ওনারাও এই সিস্টেম মেনে নেবেন। আগে তো আমাদের এসব চেয়ারে বসা লোকজনের কাছেই টাকা আসতো। এখন তো প্রয়োজন নেই। আর প্রয়োজন হলে আমরা রিসিপ্ট দেবো।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।