বিলের মাঝে ৮টি পরিবার নিয়ে একটি গ্রাম, জনসংখ্যা ৪৩জন
কচুয়ায় একটি রাস্তা পাল্টে দিতে পারে ওই গ্রামের যাতায়াতের চিত্র”
মো: মাসুদ রানা,কচুয়া
ফাইমা আক্তার একজন কোমলমতি শিক্ষার্থী। প্রতিদিন বই নিয়ে বিলের মাঝ থেকে জমির আইল দিয়ে স্কুলে যেতে হয় তার। তবে শুষ্ক মৌসুমে কোনো মতে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। তার মতো মারিয়াম আক্তার সহ অনেক শিক্ষার্থী যাতায়াত করতে না পারায় পড়েন বিপাকে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, বৃদ্ধ নারী থেকে শুরু করে বয়স্করাও চলাচল করতে অসুবিধা পড়তে হয়। বলছি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিতারা ইউনিয়নে অবস্থিত বিলের মাঝে ধৈয়ামুড়ি গ্রাম।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিলের মাঝে এ গ্রামটি। কোনো রাস্তা না থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। বর্তমানে ওই গ্রামে প্রায় ৪৩জন জনসংখ্যা রয়েছেন তন্মধ্যে ভোটার রয়েছেন ২৪জন । ছোট এ গ্রামের লোকদের যাতায়াতে অসুবিধা পড়তে হয় সব সময়।
যার কারনে অনেকে এ গ্রামে না থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। তাছাড়া পাশ্ববর্তী কোনো স্কুল না থাকায় অনেক দূরে গিয়ে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। অনেক জনপ্রতিনিধি আসে,তবে কেউ এ গ্রামের প্রতি দৃষ্টি দেয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। বিতারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মাঝিগাছা গ্রামের পূর্ব দক্ষিণ অংশের বিলে এ গ্রামের অবস্থান। উত্তর জনপদের এ বাড়িতে বসবাস করছে মোট ৮টি পরিবার। বাবা-মা, ছেলে মেয়ে, নাতী-নাতনীসহ জনসংখ্যা ৪৩জন। গ্রামের চারদিকে ফসলী জমি ও সবুজের সমাগম। বছরের প্রায় ৬ মাসেরও বেশি কাদামাটি ও পানি পেরিয়ে ঢুকতে হয় রাস্তাবিহীন ও উন্নয়ন বঞ্চিত এ গ্রামে। বর্ষার মৌসুমে একমাত্র ভরসা নৌকা। রাস্তা নির্মানের জন্য সরকারি হালট থাকলেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।
এ গ্রামের বাসিন্দা সামাদ,লাইলী বেগম,শিউলী বেগম ও আর্শাদ মোল্লাসহ একাধিক লোকজন জানান, রাস্তাঘাট না থাকায় ছেলে মেয়েদের বেশিদূর লেখাপড়া করাতে অসম্ভব হয়ে পগেছে। ফলে অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে ঝুঁকি দিচ্ছেন। স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মক্তব না থাকলেও আমাদের মূল সমস্যা যাতায়াতের রাস্তা। জন্মের পর থেকে এ গ্রামে কখনো মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা ইউপি চেয়ারম্যানদের আগমন কেউ দেখিনি। মাঝে মাঝে ইউপি সদস্য প্রার্থীরা দূর থেকে প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে কেউ কথা রাখেনি। ফলে শত বছরেও এই গ্রামের দুদিকে রাস্তা করার সুযোগ থাকলেও রাস্তা নির্মিত হয়নি। দ্রুত এ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাগবে রাস্তা নির্মানের দাবি জানান তারা।
বিতারা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্ত মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে এই ইউনিয়নে আমি প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। তবে বিলের মাঝে একটি গ্রাম রয়েছে আমি শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে ওই গ্রামের যাতায়াতের জন্য দ্রুত রাস্তা নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ছবি: কচুয়ার বিতারা ইউনিয়নে বিলের মাঝে অবস্থিত ছোট গ্রাম ধৈয়ামুড়ি।