চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও জীবননগরে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে পুলিশের অভিযান
নিউজ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গার জেলার সদর উপজেলাসহ আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলায় পৃথক পৃথক স্থানে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রায় ২৮ জন বিএনপি নেতাকর্মিকে আটক করেছে পুলিশ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছে, নাশকতা প্রস্তুতি’র মামলায় বিএনপি’র ১৩ নেতাকর্মিকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গতকাল বুধবার আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে উক্ত মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আটককৃতরা হল- আব্দুল মোতালেব (৪২), সাহাদৎ (৪৫), সোনা মিয়া (৫০), ফারুক হোসেন (৪৮), ইসরাইল হোসেন (৩৮), রফিকুল ইসলাম (২৩), লিটন মল্লিক (৪২), শুভ (২২), সাজিবর (৫৬), জিল্লুর রহমান (৪৫), আবুল কালাম (৬০), হাসানুজ্জামান মিন্টু (৩৫) ও হোসেন আলী (৪৭)
পুলিশ সূত্রে জানা যায, সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটানোর উদ্দেশ্যে একদল যুবক চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের চাঁদমারী মাঠ ও সদর উপজেলার দীননাতপুর এলাকায় জড় হয়। এসময় পুলিশ খবর পেয়ে উক্ত এলাকাগুলোতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫ জন নাশকতাকারীকে আটকসহ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে দুটি ভিন্ন মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় ২৫ থেকে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অর্ধ শতক অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। পরে গত মঙ্গলবার রাত থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার বিভিন্ন এলাকাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হল- বলদিয়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে আব্দুল মোতালেব, মৃত সামসদ্দিন ম-লের ছেলে সাহাদৎ, গোষ্ঠ বিহারের মৃত খিলাফত ম-লের ছেলে সোনা মিয়া, মৃত ওমর আলী শেখ এর ছেলে ফারুক হোসেন, আকুন্দবাড়ীয়া গাঙ পাড়ার কাসেদ আলীর ছেলে ইসরাইল হোসেন, দোস্ত গ্রামেরে হায়দার আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, কৃষ্ণপুর মল্লিকের ছেলে লিটন মল্লিক। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ইসলাম পাড়ার নূর ইসলামের ছেলে শুভ, মৃত গুলু মন্ডলের ছেলে সাজিবর, বেগমপুর হাট পাড়ার মৃত মোহাম্মদ আলী জিন্নার ছেলে জিল্লুর রহমান, সাহেব নগরের উম্মত আলী মোল্লার ছেলে আবুল কালাম, ধুতুর হাট ঝিলখালি পাড়ার মহর আলী’র ছেলে হাসানুজ্জামান মিন্টু,মোহাম্মদজুমা গ্রামের মাঝের পাড়ার মৃত ইজ্জৎ আলীর ছেলে হোসেন আলীকে আটক করে সদর থানা পুলিশ, পরে গতকাল আটককৃতদের আদালতে প্রেরন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
আলমডাঙ্গা অফিস জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে বাড়াদী ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে ৭জনকে নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা মামলা এবং অন্য ৪জনকে মারামারি মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকালে ৯টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলো- উপজেলার বাদেমাজু গ্রামের পিতা মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম বুড্ডু (৪৫), একই গ্রামের রিকাত আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪০), নাগদাহ বলিয়ারপুর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে তৌহিদুর রহমান (৩০), সোনাতন গ্রামের ইসাহক আলীর ছেলে আবু ছদ্দিন (৩৭), নতিডাঙ্গা গ্রামের মৃত মোজ্জাম্মেল ম-লের ছেলে বাড়াদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ (৪০), ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আওলাদ ম-লের ২ ছেলে আব্দুল ওহাব ও হারুন অর রশিদ, আসাননগর গ্রামের দাউদ আলীর ছেলে মিনারুল ইসলাম (৩২), মাধবপুর গ্রামের মৃত হাকিমের ছেলে ছানোয়ার হোসেন, নতিডাঙ্গা গ্রামের পানু ম-লের ছেলে আনারুল ইসলাম (৩৫) ও একই গ্রামের আক্কাচ আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। আটক বিএনপি ৫ নেতাকর্মিদের নাশকতা সৃষ্টি অপচেষ্ঠা মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এদিকে, ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিএনপি ৭ নেতাকর্মি আটকের বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে বাদেমাজু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুষ্কৃতিকারিরা ককটেল জাতীয় হাত বোমা নিয়ে জীবন ও সম্পদের ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। এ সংবাদ জানতে পেরে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে ৯টি হাত বোমা সাদৃশ্য বস্তুসহ ৩ জনকে আটক করে। সে সময় অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজসহ বাকি ৪ জনকে আটক করা হয়।
জীবননগর অফিস জানিয়েছে, জীবননগর থানা পুলিশের অভিযানে নাশকতামূলক কর্মকা-ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভ্যানচালকসহ ৪ জন গ্রেফতার হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়ার নির্দেশে জীবননগর থানা পুলিশের একটি টিম উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে বিশারত ম-লের ছেলে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম (৪৮), একই গ্রামের গফুর ম-লের ছেলে আব্দুল হান্নান (৫০), উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের মন্টুর ছেলে রাজিব (২২) এবং পৌরসভার তেতুলিয়া গ্রামের বিশারত ম-লের ছেলে ভ্যানচালক ইসমাইলকে (৩৫) নাশকতামূলক কর্মকা-ের সাথে জাড়িত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।