আশুরা আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে ১০। মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে মহররম একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ মাস।
আশুরার রোজা
রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরার রোজা নিজে পালন করেছেন এবং উম্মতকে রাখার প্রতি নির্দেশ করেছেন। তাই তাঁর অনুসরণ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রমজান মাসের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা মহররম মাসে আশুরার রোজা। ’ (সুনানে কুবরা, হাদিস : ৮৪২১০)
আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এই রোজা বিগত বছরের গুনাহ মুছে দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)
অন্য এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর প্রতিদান প্রত্যাশা করছি আরাফার রোজা বিগত বছর ও আগত বছরের গুনাহ মার্জনা করবে। আরো প্রত্যাশা করছি আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মার্জনা করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হদিস : ১১৬২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এ রোজার ব্যাপারে খুব আগ্রহী থাকতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ফজিলতপূর্ণ দিন হিসেবে আশুরার রোজা এবং এ মাসের রোজা অর্থাৎ রমজানের রোজার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যত বেশি আগ্রহী দেখেছি অন্য রোজার ব্যাপারে তদ্রূপ দেখিনি। (সহিহ বুখারি হাদিস, ১৮৬৭)
আশুরার রোজা যখন যেভাবে রাখতে হবে
আশুরার রোজা রাখার ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো আশুরার রোজা হবে দুটি। অর্থাৎ জিলহজের ৯-১০ বা ১০-১১ যেকোনো পদ্ধতিতে আদায় করা যায়। আলেমদের মধ্যে আশুরার রোজার দিন প্রসঙ্গে দ্বিমত আছে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তোমরা ৯ ও ১০ (এই দুই দিন) রোজা পালন করো এবং (এই ক্ষেত্রে) ইহুদিদের বিপরীত করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৫)
একটি হাদিসে এমন পাওয়া যায়, আল্লাহর রাসুল (সা.) জীবনের শেষ বছর বলেছেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে মহররমের ৯ তারিখেও সিয়াম পালন করব। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৭)
অন্য বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরো একটি রোজা রেখে নিয়ো। ’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১৫৪)
তবে নবীজির আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জিলহজের ৯ ও ১০ তারিখ রোজা রাখা উত্তম।
আল্লাহ তাআলা আমাদের পবিত্র আশুরার দিনের করণীয় যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।