আলমডাঙ্গার আট কপাট এলাকায় সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে শেষ রাতের দিকে তান্ডব চালিয়েছে ডাকাতদল। ঢাকা থেকে আসা যাত্রী, হাসপাতালে নেওয়া রোগীর স্বজন ও জরুরী কাজে বাড়ি থেকে বের হওয়া পথচারীদের বেধড়ক পিটিয়ে নগদ অর্থ ও গয়নাগাটি লুটে নেয় ডাকাতরা। গত দুই মাস ধরে পুলিশের অভাবনীয় নীরবতায় নির্বিঘ্নে ডাকাতরা ওই তান্ডব চালানোর সাহস পেয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
ডাকাতের কবলে পড়া ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ৩ টা থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত ডাকাতদল দীর্ঘসময় ধরে আটকপাট এলাকায় অবস্থান করে। তারা একটি মেহগনি গাছ কেটে সড়কে ব্যারিকেট দেয়। রাত সাড়ে ৩ টা থেকে ভোর পর্যন্ত যারাই ওই সড়ক ধরে যাওয়া-আসার চেষ্টা করেছে তারাই ডাকাতদের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছে।
রাত সাড়ে ৩ টার দিকে প্রথম ডাকাতের কবলে পড়েন বেলগাছি গ্রামের মৃত খোকা মন্ডলের ছেলে তাসমান। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাসমানের গর্ভবতী মেয়ে সুলতানার প্রসব বেদনা ওঠে। উপায়ন্তর না পেয়ে বেদনাকাতর মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে প্রতিবেশী হাসানের ভ্যানে করে আলমডাঙ্গার ক্লিনিকে আসছিলেন। আটকপাট এলাকায় পৌঁছলে তারা ডাকাতের কবলে পড়েন। ডাকাতরা তাসমান ও ভ্যানচালক হাসানকে বেদম পিটিয়ে তাদের কাছে থাকা টাকা কেড়ে নেয়। একইসময় তাসমানের স্ত্রীর কানের ও হাতের গয়না কেড়ে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
এরপর রাত সাড়ে ৪ টার দিকে ডাকাতদলের কবলে পড়েন পাঁচলিয়া গ্রামের বকুল হোসেনের ছেলে বেলাল। তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে গভীর রাতে ট্রেন থেকে আলমডাঙ্গায় নামেন। দীর্ঘক্ষণ স্টেশনে বসে থেকে রাত ৪ টার পর ভ্যানে করে পাঁচলিয়ায় বাড়ি ফিরছিলেন। আটকপাট এলাকায় পৌঁছলে ডাকাতরা প্রথমে বেলাল ও ভ্যানচালককে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এরপর গামছা দিয়ে বেলালের মুখ বেঁধে ফেলে। একটি অসমর্থিত সূত্র বলেছে, এসময় ডাকাতরা বেলাল ও তার স্ত্রীকে আলাদা করে ফেলে। তবে এব্যাপারে বেলাল মুখ খোলেননি।
সবশেষে ডাকাতের কবলে পড়েন হাউসপুর গ্রামের রহমানের ছেলে কশাই শরিফুল ইসলাম। তিনি ভোরের দিকে আসাদুল নামের একজনের ভ্যানে করে বেলগাছি গ্রামে যাচ্চিলেন গরু কিনতে। তিনিও ডাকাতের কবলে পড়েন। তাকেও মারধর করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর পরই সকাল হলে ডাকাতরা স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। সেইসাথে আলমডাঙ্গা-বেলগাছি সড়কের আটকপাটে প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে চলা ডাকাতদের তান্ডব থামে।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) আবু সাঈদ জানান, ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি।