নিজিস্ব প্রতিবেদকঃ
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় জিকে সেচ প্রকল্পের ইরিগেশন খালের পাড় ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়া ফসলি জমি থেকে পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস।
জানা গেছে, গত বুধবার সকাল থেকেই খালটি পানিতে পূর্ণ হতে থাকে। বিকেলের দিকে কেদারনগর গ্রামের কাছে প্রচ- পানির চাপের ফলে খালের প্রায় ৬০ ফিট পাড় ভেঙ্গে যায়। পানির তোড়ে সন্ধ্যার মধ্যে ভাঙা অংশের পরিমান আরও বৃদ্ধি পায়। এতে বেলগাছি, পোয়ামারি, খেজুরতলা ও কেদারনগর গ্রামের চারটি মাঠের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি এবং দুটি মাছের পুকুর প্লাবিত হয়। তলিয়ে যায় ধান ও পাটের জমি। অনেক কৃষকের জমিতে কেটে রাখা পাট পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে ছিন্নভিন্ন হয়। পাট উদ্ধার করতে গিয়ে কেদারনগর গ্রামের আরোজ আলী ও তার নাতি জীবন গুরুতর আহত হন।
এদিকে, বুধবার রাতভর খালের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার পর গতকাল থেকে চেংমারী বিল ও ঘোলদাঁড়ি হয়ে পানি ভাটিতে নামতে শুরু করে। ফলে প্লাবিত জমির পানি ধীরে ধীরে কমছে। তবে কৃষকরা এখনো জমির ক্ষতির ব্যাপারে শঙ্কিত। কারণ অনেকে তাদের ফসল পঁচে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, একই স্থানে পরপর তিন বছর পাড় ভেঙেছে, তবে কোনো টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। গ্রামবাসী সানোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কার্যকরি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পাড় মেরামতের নামে দায়সারা কাজ করা হয়েছে, যা মূলত সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়।
বর্গাচাষী রেজাউল হক বলেন, ‘এ নিয়ে তিন বছর পাড় ভেঙে ফসল ডুবে গেল। কিন্তু সরকার ভালোভাবে পাড় মেরামত করে না। এতে আমরা সাধারণ কৃষকরা বিপদে পড়ি। পাকা ওয়াল নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমাদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পাকা ওয়াল নির্মাণ করে দিতে হবে। তা না হলে আগামীতে আমদের ফসলের ক্ষতি ও সেচের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপাই থাকবে না।’
বেলগাছি ইউপির কেদানগর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লাল্টু হোসেন বলেন, ‘এ নিয়ে পরপর তিনবার একই জায়গাই পাড় ভাঙলো। সারারাত ক্যানেলের পানিতে ফসলি জমি ডুবে ছিল। সকাল থেকে পানি ভাটিতে নামতে শুরু করেছে। কিন্তু পুরোপুরি পানি নেমে যাবে না, অনেক ধান পচে নষ্ট হবে। এতে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০ দিনের মধ্যে পাড় মেরামতের কাজ সম্পন্ন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। কৃষকরা টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি করেছে, যা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে।’