গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া মামলার ৩ আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এরমধ্যে আলমডাঙ্গা আওয়ামীলীগের ভোকাল প্রিন্স খ্যাত চশমা তুহিন রয়েছে। তবে এরা সকলে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি। গতকাল রবিবার বিকেলে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে, মামলাটির প্রধান আসামীসহ প্রভাবশালী আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার মৃত বারেক আলীর ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানা তুহিন, শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সাত্তার মুন্সির ছেলে আওয়ামী লীগের নেতা ওয়াদুদ মুন্সি ও মাজু গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে রোকনুজ্জামান নাহিদ।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নির্বিচারে পিটিয়ে মাথা ফাটিনো ও হাত ভেঙ্গে দেওয়ার ঘটনায় ৪৭ জন নামীয়সহ ৬০/৭০ জন অজ্ঞাত আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পার দুর্গাপুরের ওবায়দুল্লাহ বাদী হয়ে গত ১৬ আগস্ট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টারকে ১ নং আসামী করা হয়েছে।
এছাড়া গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আলমডাঙ্গা এ টিম মাঠ, হারদী ও ভাংবাড়িয়া গ্রামে সমাবেশের কর্মসূচি দেয়। আলমডাঙ্গা ও হারদী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা আসা শুরু করলে তাদের উপর আতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে আসা ২০ জন শিক্ষার্থীকে পেটানো হয়। এদের কয়েক জনের মাথা ফাটিয়ে ও হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল হোসাইন বাদশা, হায়াত আলী, আশরাফুল হক, সাইফুর রহমান পিন্টু, উপজেলা চেয়ারম্যান কেএম মঞ্জিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, জেহালা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান শিলন, কুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিন্টু, বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল, নাগদাহ ইউপি চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল, ডাউকি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম, খাদিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহিদুর রহমান লোটাস, চিৎলা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরোয়ার, খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান তাফসির আহমেদ মল্লিক লাল ও হাট ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান হান্নান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ফারুকসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে ওই মামলা দায়ের করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর এমন পৈশাচিক নির্যাতনে আলমডাঙ্গার মানুষ ব্যথিত হলেও হামলাকারীদের দোর্দন্ড প্রতাপে কেউ মুখ খোলেনি। দীর্ঘ ১২ দিন পর মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর এতদিন একজন আসামীকেও পুলিশ গ্রেফতার করেনি। গতকাল যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে ওই অজ্ঞাত আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ, এ মামলার এজাহারে ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান আসামীসহ অধিকাংশ আসামি বাড়িতে অবস্থান করলেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ।