সার্বিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহসাই আশার আলো দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘এমন এক পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, আমরা পরিস্থিতির বলি হয়েছি।’
প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্টতার কারণে রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে দায়ী না করেই বলি, সবাই নিজের স্বার্থ দেখবে। এতে করে রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে। শিগগিরই এবং খুব সহজে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে বলে টানেলের শেষ প্রান্তে কোনো আলো দেখা যাচ্ছে না। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না হলে এটা বাকি বিশ্বের জন্য ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে।’
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৪’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এ সংলাপের আয়োজন করেছে।
অন্যান্য বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুর পরিপ্রেক্ষিতেও বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের আলাদা আলাদা স্বার্থ রয়েছে। গত আট বছরে এই সংকট নিরসনে বড় প্রতিবেশীর কাছ থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতা প্রত্যাশার চেয়ে কম।
তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের বিষয়টিকে আমি এভাবে দেখি যে, তাদের নিজেদের স্বার্থ আছে বলে আমাদের পাশে এসে সমস্যার সমাধান তারা করেনি। ফলে এই সমস্যা আমাদের জন্য বড় ধরনের বোঝা তৈরি করেছে। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্যই হুমকি হয়ে থাকবে না, তা ছড়িয়ে পড়বে অন্যখানেও।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে চীন কেন এগিয়ে আসেনি, এমন প্রশ্ন উঠতে পারে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বঙ্গোপসাগরে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে চীনের কাছে মিয়ানমার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে ভারত চিন্তা করেছে রাখাইনের কালাদান প্রকল্প তার উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর প্রবেশাধিকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই প্রকল্পের জন্য ভারতের কাছে মিয়ানমারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার কোনো বিকল্প নেই।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে। কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম। প্রতিটি পরিবর্তনে ফল আসতে সময় লাগে। আমি বিশ্বাস করি, বিভিন্ন বিষয়ের সমাধানের জন্য আমাদের আরও কিছুটা ধৈর্যের প্রয়োজন। রাজনীতিবিদ, তরুণ প্রজন্মসহ সমাজের সবারই এই ধৈর্যের প্রয়োজন।