নিউজ ডেস্ক:
ভারতের নিজ মাটিতে নির্মিত ভূমি থেকে আকাশে ছোড়ার ক্ষেপণাস্ত্র ‘আকাশ’ প্রাথমিক পরীক্ষায় বেশ কয়েক বার ব্যর্থ হয়েছে। ওই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের যতগুলি পরীক্ষা হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই বিফল হয়েছে।
দেশটির কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি বা ‘ক্যাগ’) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংসদে পেশ করা ‘ক্যাগ’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘দেশে তৈরি ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ব্যর্থ হয়েছে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলির যে গতিবেগে ছোটার কথা, সেই গতিবেগও ছুঁতে পারেনি ‘আকাশ’। ক্ষেপণাস্ত্রগুলির গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি বার বার বিকল হয়ে পড়েছে উৎক্ষেপণের পরীক্ষার সময়। ‘
ক্ষেপণাস্ত্রগুলি রয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অস্ত্রভান্ডারে। বিমানবাহিনী অবশ্য ‘ক্যাগ’ রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি।
‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বানিয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘ভারত ইলেকট্রনিক্স’।
‘ক্যাগ’ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বানানোর জন্য ইতিমধ্যেই ভারত ইলেকট্রনিক্সকে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হলেও, চুক্তির সাত-সাতটা বছর কেটে যাওয়ার পরেও সেগুলি ভারতের যে ৬টি জায়গায় বসানোর কথা ছিল, সেই জায়গাগুলির একটিতেও বসানো যায়নি।
‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ‘নেক্সট জেনারেশন’ ক্ষেপণাস্ত্রও বানানো হয়েছিল। তার নাম- ‘আকাশ-এমকে-২’। সবগুলিই মাঝারি পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে ছোড়ার ক্ষেপণাস্ত্র। যা দিয়ে শত্রু পক্ষের যুদ্ধবিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে ধ্বংস করা যাবে। তবে লক্ষ্যবস্তুকে থাকতে হবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলির ১৮ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে।
‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে। দু’বছর পরে ওই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও ৬টি স্ক্যোয়াড্রন বানানোর নির্দেশ দিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। যার মধ্যে আলাদা ৩টি স্ক্যোয়াড্রনে থাকবে মিসাইল লঞ্চার, র্যা়ডার আর শ’য়ে শ’য়ে ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র। ওই ৩টি স্ক্যোয়াড্রন থাকার কথা পূর্বাঞ্চলে বিমানবাহিনীর ৬টি ঘাঁটিতে।
‘ক্যাগ’ রিপোর্ট বলা হয়েছে, ৬ মাস থেকে দেড় বছর দেরী করে শেষমেশ ২০১৪’র এপ্রিল থেকে ২০১৬’র জুনের মধ্যে বিমানবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের ৬টি ঘাঁটিতে সেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পাঠানো হলেও, সেগুলি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ২০১৪-র নভেম্বর পর্যন্ত যে ৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র বিমানবাহিনীর হাতে পৌঁছেছিল, ওই বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তার মধ্যে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল। তার মধ্যে ৬টি ক্ষেপণাস্ত্রই (৩০ শতাংশ) পরীক্ষায় উতরে যেতে পারেনি।