বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

অবশেষে উদ্ভাবন হলো চিকুনগুনিয়ার ভ্যাকসিন !

নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের গ্যালভেস্টন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের চিকিৎসাবিজ্ঞান বিভাগের গবেষকরা সম্প্রতি বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করা চিকুনগুনিয়া ব্যাধির ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দাবি করেছেন। আক্রান্ত মানবদেহে এখনো এর প্রয়োগ না করা হলেও গবেষণাগারে প্রাণীদের ওপর পরীক্ষণে বিস্ময়কর সুফল দেখা গেছে এ ভ্যাকসিনের। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর সাইন্স ডেইলি পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভাইরাসটির একটি পতঙ্গকেন্দ্রিক হাইব্রিড ব্যবহারের মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া জ্বরের একটি প্রোটোটাইপ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেন বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষকরা।

মানবদেহে ভ্যাকসিনটি এখনো প্রয়োগ করে দেখা হয়নি, তবে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত ইঁদুর এবং বানর জাতীয় প্রাণীকুলের মধ্যে এর প্রয়োগে অভাবনীয় সাফল্য পাওয়া গেছে। গবেষণায়, ভ্যাকসিন প্রয়োগের চার দিনের মধ্যে আক্রান্ত প্রাণীদেহে এক প্রকার অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করে যা চিকুনগুনিয়া ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। প্রায় ১০ মাস প্রাণীর দেহে এটি কার্যকর থাকে। ন্যাচার মেডিসিন নামে শীর্ষস্থানীয় এক পত্রিকায় বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

সাইন্স ডেইলি জানায়, ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে, রোগীর দেহে এটি কার্যকর হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং রোগীর স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য তা কতোটুকু হুমকি হয়ে উঠতে পারে, তার মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে, আদি ভাইরাসের দুর্বল সংস্করণ থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি এসব ‘লাইভ অ্যানুয়েটেড’ ভ্যাকসিন তুলনামূলক দ্রুততায় কার্যকর হয়ে থাকলেও, কখনো কখনো এতে রোগীর আক্রান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। পক্ষান্তরে, ‘অক্রিয়’ ভ্যাকসিনে রোগীর স্বাস্থ্যঝুঁকি কিংবা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তাকে না, তবে, একে সক্রিয়ভাবে কার্যকর করে তুলতে চাইলে এর সঙ্গে বুস্টার এবং একাধিক ডোজও প্রয়োগ করতে হয়।

এসব বাধা কাটিয়ে উঠে এমন একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করেন ইউটি গ্যালভেস্টনের গবেষকরা, যা একই সঙ্গে দ্রুত কাজ শুরু করে এবং স্বাস্থ্যের জন্যও নিরাপদ। এ পর্যায়ে আইলাট নামে একটি ভাইরাসকে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করে প্রোটোটাইপ ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবনে সমর্থ হন গবেষকরা। এ ভাইরাস কেবল কীটপতঙ্গকে আক্রান্ত করে থাকে, মানবদেহের জন্য সম্পূর্ণ অক্ষতিকর।

চিকুনগুনিয়ার কাঠামোগত প্রোটিনের সঙ্গে যখন আইলাট ভাইরাসের ক্লোন একীভূত হয়ে যায়, তখন উৎপন্ন হাইব্রিডটি হয় চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের প্রাকৃতিকভাবে তৈরি অন্যান্য রূপের অবিকল এক প্রতিরূপ। হাইব্রিডটির ‘কপি’ মশার দেহে তৈরি হয়ে থাকলেও স্তন্যপায়ী প্রাণী, তথা মানবদেহে এর কোনো পুনরুৎপাদন ঘটে না।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular