প্রতিবেদক আলমডাঙ্গাঃ- সত্য কখনো চাপা থাকে না, এটা আবার প্রমান হলো আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম ছরোয়ার মিঠুর ক্ষেত্রে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকেই আবারো ভয়াবহ রূপ ধারণ করে সদ্য সরকারিকৃত আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণ এবার কোন ছাত্র-ছাত্রী নয় স্বয়ং কলেজের সকল শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে নিজে মুখেই তার বিভিন্ন অপকর্ম সহ নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দের নিকট থেকে জোরপূর্বক হাতিয়ে নেওয়া টাকা সহ জালিয়াতি করে জোরপূর্বক আদায় করা অর্থের বিষয়ে নিজের মুখেই স্বীকারোক্তি দেন ছাত্র আন্দোলনের মুখে সদ্য অব্যাহতি নেওয়া অধ্যাক্ষ গোলাম সরোয়ার মিঠু এ বিষয়ে কলেজের সাধারণ শিক্ষক ও কর্মচারীরা সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করলে অবশেষে কলেজের বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছাত্র আন্দোলনের মুখে অব্যাহতি নেওয়া অধ্যক্ষ গোলাম সরোয়ার মিঠুকে ডেকে সকলের উপস্থিতিতে আলোচনায় বসেন ।
এ সময় ক্ষমতার বলে গত ২৪-০১-২০১৮ থেকে ০৭-৫-২০২২ তারিখ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব থাকা গোলাম সরোয়ার মিঠু সাধারণ শিক্ষকদের আনা সকল অভিযোগ কে মিথ্যা বলে দাবি করেন কিন্তু পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষকরা দিনভর তাকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষকদের ২২লক্ষ ৫০হাজার টাকা ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করতে থাকলে দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে অবশেষে গোলাম সরওয়ার মিঠু তার দুর্নীতির কথা স্বীকার করে ৭ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়।
এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষকরা শুধু মুখের কথায় মানতে না চাইলে তিনি স্ট্যাম্প পেপারের মাধ্যমে লিখিত ভাবে নিজ স্বাক্ষরের মাধ্যমে রাত ৮টার সময় একটি অঙ্গীকারনামা বর্তমান কলেজের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সৈয়দ আল মামুন রেজার নিকট জমা দেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা গোলাম ছরোয়ার মিঠুর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান এবং এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সৈয়দ আল মামুন রেজা সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের কাছ থেকে যে টাকা আত্মসাৎ করেছিল গোলাম সারওয়ার মিঠু তা আজ শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে স্বীকার করে লিখিতভাবে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুইটা কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে সম্মত হয়েছেন। উল্লেখ্য যে এর আগে ব্যাপক দূর্নীতি, ঘুষ, নিয়োগ-বাণিজ্য, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি ধার্য, বি এম শাখায় প্রেক্টিক্যাল পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ কোচিং ক্লাসের নামে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অধিক অর্থ নেওয়া সহ নানা অনিয়ম করায় বারবার পত্রিকার শিরোনামে আসে আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের গোলাম সরোয়ার মিঠু।
এছাড়াো বিভিন্ন সময় সোসাল মিডিয়ায় তার অনিয়মের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে গত ০৭-০৫-২০২২ তারিখে ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলনে মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় গোলাম সরওয়ার মিঠু। এ বিষয়ে কলেজের সাধারণ শিক্ষক আমিরুল ইসলাম জয় বলেন গোলাম সারওয়ার মিঠু অধ্যক্ষের দায়িত্ব থাকা অবস্থায় আমাদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন পরিমাণে অর্থ আদায় করতো আমরা যার কোন সঠিক কারণ কোনদিনই জানতে পারিনি আমরা কোন বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদেরকে চাকরিযুতো করার হুমকি দিতেন তিনি এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, কি আর বলবো এই অত্যাচারী গোলাম সরোয়ার মিঠুর কথা পড়াশোনা শেষ করে আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের অনার্স ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। কিন্তু যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে কখনো আত্তীকরণ, কখনো মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো, কখনো কলেজের বিভিন্ন খরচ, কখনো উপর মহলে দেওয়ার কথা বলে একের পর এক বিপুল পরিমাণে অর্থ নিতে থাকে গোলাম সরোয়ার মিঠু।
একেতো কলেজ থেকে কোন বেতন পাই না তার ওপর মাঝে মাঝেই টাকার দাবি দেবো কোথা থেকে আমি, তবুও চাকরিটা টিকিয়ে রাখার জন্য, আর কোন এক সময় সমাধান হবে এই ভেবে আমার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেও আমি টাকা দিয়েছি। সবকিছু মুখ বন্ধ করে নীরবে সয়ে গেছি,চাকরি বাচাবার আশায়।