মেহেরপুরে মধ্যবয়সী নারীকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩
নিউজ ডেস্ক:
মেহেরপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ পাড়ায় এক মধ্যবয়সী স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে (৪০) রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে নির্যাতনের শিকার ওই নারী মেহেরপুর সদর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত ৩/০৩ এর (৩)।৩২৩,৩৭৯,৩৮৫,৫০৬ ধারায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ২। তারিখ ৩/৬/২০২০০। এ মামলার পর গত বুধবার দিবাগত রাতে মেহেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্জুন কুমার সরকারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষককে আটক করেন।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মেহেরপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়ার মৃত আমিন উদ্দিনের ছেলে রাব্বী (২৫), আ. সামাদের ছেলে শাকিল (২২) ও আনারুলের ছেলে ইমরান (২৩)। মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ দারা খান জানান, গত বুধবার রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গণধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা মেহেরপুর শহরের শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আসামিদের গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার বিবরণে নির্যাতিতা নাজমা খাতুন বলেন, ‘আমি লালনের ভক্ত। এই সুবাদে আমি গত শনিবার (৩০ মে) কালাচাঁদপুর লালন ভক্ত এক মহিলার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
পরে উনি সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে বাড়িতে আসেন, আমি ওনার সঙ্গে দেখা করে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিই। এ সময় কোনো গাড়ি-অটো পাচ্ছিলাম না। হাঁটতে হাঁটতে আসার কারণে একটু সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। শহরের শেখপাড়ায় পৌঁছানোর পর রাস্তায় আমাদের একই তরিকার ভক্ত আহসানের সঙ্গে দেখা হয়। আহসান শেখ পাড়ার তাজুল ইসলামের ছেলে। আহসান আমার পূর্ব পরিচিত। আহসানের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে আমাকে আম ও লিচু দেওয়ার জন্য পাশের বাগানে নিয়ে যায়। ওই বাগান আহসান পাহারা দেয়। বাগানের ভেতরে গিয়ে দেখি আরও দুজন ছেলে আছে। ওরা আহসানের সঙ্গে থাকে। ওরা সবাই বলল বুবু কয়েকটি আম খেয়ে যান। তাই আমিসহ সবাই বাগানের ভেতর একটি ছোট্ট শান-বাঁধানো জায়গায় বসেছিলাম। হঠাৎ করেই রাব্বি, শাকিল ও ইমরান এসে আমাদের গালাগালি করে।
বলে তোরা এখানে কী করছিস এবং অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে আহসানসহ ওই দুটি ছেলের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে। তাদের মধ্যে একজন এসে আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে চেষ্টা চালায় ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে যখন আমি বাধা প্রদান করি, তারা তখন আমার সঙ্গে আচরণ আরও খারাপ করে। তারপর আমাকে বাগানের একটি ঘরে নিয়ে পালাক্রমে রাতভর ধর্ষণ করে। পরে আবার মাঝরাতে তারা হেরোইন সেবন করে আমাকে ধর্ষণ করে এবং আমাকেও খাওয়ানো চেষ্টা চালায়। তারা আহসান ও আহসানের সঙ্গে থাকা ছেলে দুটিকে ফাঁসাতে তাদের নাম বলানোর জন্য আমাকে মারধর ও ভিডিও করে। ভোররাতে ওরা চলে যাওয়ার সময় আমার মোবাইল, ব্যাগ ও ব্যাগে থাকা ভোটার আইডির কপি, ছবি ও কিছু টাকা নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা বলে ৫০০০ টাকা নিয়ে এগুলো নিতে এখানেই আসবি।