কার্লোস কামেনিকে প্রথমার্ধে ওই একবারই পরাস্ত করতে পেরেছেন রোনালদোরা। এরপর অনেকবারের চেষ্টাতেও মালাগা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারেননি তাঁরা। তা সেটা রোনালদো হোন কিংবা ক্রুস। উল্টো রিয়ালই গোল খেয়ে বসতে পারত।
বার্সেলোনার একাডেমি খেলোয়াড় সান্দ্রো রামিরেজ বলেছিলেন, রিয়ালকে হারিয়ে প্রিয় বার্সাকে শিরোপা উপহার দিতে চান। ২০ মিনিটে সেটা প্রায় করেই ফেলেছিলেন। তাঁর দুর্দান্ত ফ্রি কিকটা যখন জালে আশ্রয় নেওয়ার পথে, হঠাৎ করেই উড়ে এলেন কেইলর নাভাস। অবিশ্বাস্য এক সেভে দলকে এগিয়ে রাখলেন রিয়াল গোলরক্ষক।দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটেই শিরোপা জিতে নিয়েছে রিয়াল। যখন করিম বেনজেমার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে গেল জিনেদিন জিদানের দল। রিপ্লেতে অবশ্য দেখিয়েছে, প্রথমে অফসাইডে না থাকলেও ভারানের কাঁধে লেগে যখন বল এল বেনজেমার কাছে, তখন অফসাইডেই ছিলেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার।
এরপরও দুই গোলই গোল করতে পারত। কিন্তু দুই গোলরক্ষকই অতিমানবে রূপ নেওয়ায় ব্যবধানটা আর বদলায়নি।
অবশ্য ওতেই খুশি। পাঁচ বছর পর লিগ শিরোপা জেতা বলে কথা, ৩৩তম লিগ শিরোপা!ম্যাচের আগে ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব শুনিয়েছে বার্সেলোনা। রিয়ালকে শিরোপা জেতাতে ম্যাচ ছেড়ে দেবে মালাগা—এমন কথাবার্তা শুনিয়েছে কাতালুনিয়ার পত্রপত্রিকা। কিন্তু এইবারের বিপক্ষে বার্সার প্রথমার্ধ দেখে মনে হয়েছে, তারা নিজেরাই বোধ হয় রিয়ালকে শিরোপা দিয়ে দিতে চাইছে!
মাত্র ৭ মিনিটেই ন্যু ক্যাম্পকে স্তব্ধ করে দিয়ে গোল করে বসেন তাকাশি ইনুই। পরের মিনিটেই সমতা ফেরাতে পারতেন লুইস সুয়ারেজ। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়ে বাইরে বল পাঠিয়েছেন সুয়ারেজ। ১৪ মিনিটে সে দুঃখ কাতিয়ে গোল করে দেখেন, তাঁকে গোল করানো জর্ডি আলবা ছিলেন অফসাইডে। এরপর আরও একবার গোলের সহজতম সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু আরও একবার তাঁর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন গোলরক্ষক ইউয়েল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ব্যবধানটা উল্টো ২-০ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু ইনুইয়ের শট থেকে পাওয়া ফিরতি বল হাস্যকরভাবে বাইরে পাঠিয়ে দেন কিকে।
ব্যবধানটা ২-০ হলো ৬১ মিনিটে। দ্বিতীয় গোলটিও ইনুইয়ের! দ্বিতীয় গোলটি খেয়েই জেগে উঠল বার্সা। ২ মিনিট পরে নেইমারের শট বারে লেগে ফেরা পথে ডেভিদ হুঙ্কার পায়ে লেগে জালে। ম্যাচে ফিরল বার্সা (২-১)। ৭০ মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ। পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারলেন না মেসি! সমতা ফিরল ৩ মিনিট পর। পাকো আলকাসেরের দারুণ এক পাস থেকে পুরো ম্যাচে করা মিসের দায় মেটালেন সুয়ারেজ। ২ মিনিট পরেই আরেকটি নেইমার-শো। এই ফরোয়ার্ডকে আটকাতে গিয়ে লাল কার্ড দেখলেন ক্যাপ রদ্রিগেজ। ম্যাচের দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে আর গোল করতে ভুল করেননি মেসি (৩-২)। ম্যাচের যোগ করা সময়ে পাঁচজনকে কাটিয়ে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধানটা আরও বাড়িয়েছেন মেসি (৪-২)।কিন্তু এ ফেরাটাই সান্ত্বনা হয়ে থাকল বার্সেলোনার। অন্য ম্যাচে যে রোনালদো আগেই শিরোপা জয়ের মঞ্চ সাজিয়ে নিয়েছেন ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই ।